রমজানে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা চান ব্যবসায়ীরা

রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতাদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেটের নিরাপত্তা এমনকি যানজট নিরসন করে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সহায়তা চাওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ছিনতাইকারী, টানা পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি সম্পর্কে সজাগ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতারা যানজট নিয়ন্ত্রণ, ক্রেতাদের নির্বিঘ্নে চলাচল, চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের কার্যকরী ভূমিকা, রাতের বেলায় মার্কেটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা,  শপিং শেষ করে ক্রেতারা যেন ছিনতাই কিংবা অজ্ঞান পার্টির সম্মুখীন না হয় সে ব্যাপারে পুলিশের সহায়তা চান।

এ বছর রমজানে স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে। একইসঙ্গে মার্কেটে থাকবে ক্রেতাদের চাপ। এতে  ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলো তুলে ধরেন ব্যবসায়ী নেতারা। এছাড়া সম্প্রতি প্রকাশ্যে গুলির ঘটনায় নিয়েও ব্যবসায়ীদের শঙ্কার কথা ডিএমপি কমিশনারকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে ।

সম্প্রতি রাজধানীর শ্যাওড়াপাড়ায় রাস্তায় ছুরিকাঘাতে এক চিকিৎসকের মৃত্যু এবং শাজাহানপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে দুজন নিহতের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। এসব ঘটনায় চলমান শঙ্কা কাটিয়ে ক্রেতারা মার্কেটে আসবে এমনটাই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

গত দু'বছর করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের কারণে অনেকেই মার্কেটবিমুখ ছিল। কিন্তু এবছর করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় নেই কোনও বিধিনিষেধ। রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে সে কারণে মার্কেট মুখে ক্রেতাদের চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। এসময় মার্কেটগুলো নিরাপত্তার পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এসব চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখেই নিরাপত্তা নিশ্চিতে এরই মধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে।

সম্প্রতি অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ঈদ ও রমজানকে কেন্দ্র করে জনগণের চলাচল নিশ্চিত করতে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশকেও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি, মলম পাটির তৎপরতা ঠেকাতে এসব চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতারের নির্দেশনাও দেন। এছাড়াও থানা পুলিশকে টহল বাড়ানো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা ডিএমপি কমিশনারের কথায় আস্থা রাখতে চাই। আমরা চাই ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নিরাপত্তা সবচেয়ে বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এবার স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে, একইসঙ্গে মার্কেটে ক্রেতাদের চাপ থাকবে। এসব বিষয়ে আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা বেশি জোর দিয়েছি।

তিনি বলেন, সব সময়ই দেখা যায় রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে ছিনতাইকারী কিংবা অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় অপকর্ম ঘটিয়ে থাকে। এই শঙ্কা যেন এবছর না থাকে সেজন্যই পুলিশ ও গোয়েন্দারা আরও বেশি সক্রিয় থাকবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করছি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন,  ক্রেতাদের চাপ বেশি থাকবে ধারণা করেই আমরা সে অনুযায়ী  পরিকল্পনা করেছি। রাত কিংবা দিন ক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে মার্কেট ঘুরে বাসায় ফিরতে পারে, রাস্তায় কোনও ধরনের ছিনতাইয়ের কিংবা অজ্ঞান পার্টির শিকার যেন না হন সে জন্য রাস্তায় ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকাকেন্দ্রিক যেসব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে সেসব ছিনতাইয়ের ঘটনা এনালাইসিস করে এসব চক্রের সদস্যদের আমরা আইনের আওতায় এনে গ্রেফতার করছি। তারপরও যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে সেসব ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে আমরা তৎপর।