মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও রাজাকারদের তালিকা করুন: জেড আই খান পান্না

মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও রাজাকারদের তালিকা করার দাবি জানিয়েছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না। বুধবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলা ট্রিবিউনের উদ্যোগে ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও গবেষকের সাক্ষাৎকারভিত্তিক গ্রন্থ ‘জয় বাংলা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ছিলাম, পরবর্তী সময়ে মুজিব বাহিনী গঠিত হলে সেখানে সমন্বয়ক হিসেবে ছিলাম। আমি একটা দাবি তুলবো, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও রাজাকারদের তালিকা করুন।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের সময় সর্বসাকল্যে ১ কোটি মানুষ ভারতে যেতে পেরেছিলেন। বাকি ৫ কোটি মানুষ বাংলাদেশেই ছিলেন। যুদ্ধের সময় তারাই আমাদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) আশ্রয় দিয়েছেন, খাবার দিয়েছেন। তারাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন। মুষ্টিমেয় রাজাকার-আলবদর ছাড়া আর কেউ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেনি।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় ছারছিনার পীর শাহ মো. মহিবুল্লাহ স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে তাকে দেওয়া দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা 'স্বাধীনতা পদক' প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধা জেড আই খান পান্না। পদক প্রত্যাহার করা না হলে এ বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। ‘রাজাকারদের নেতা ছারছিনার পীরকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছে’ উল্লেখ্য করে মুক্তিযোদ্ধা জেড আই খান পান্না বলেন, অনতিবিলম্বের তার এই পদক বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।... রাজাকাররা কোনও সুবিধা ভোগ করবে, এটা বরদাস্ত করতে পারি না।’

জয় বাংলা গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বাংলা ট্রিবিউনের প্রকাশক কাজী আনিস আহমেদ, সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, নগদ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশু। এ সময় অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয় এবং ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।

বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর; এই মাইলফলকের সঙ্গী হতে বাংলা ট্রিবিউন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা নন, তাদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে গবেষক, সাহিত্যিক ও সংগঠকসহ মোট ৫০টি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তাদের কয়েকজনের সাক্ষাৎকারও তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রন্থে। মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে।