একদিনে নয়, ধাপে ধাপে ভোটের প্রস্তাব দিলেন সাংবাদিকরা

জাতীয় নির্বাচনে সারা দেশে একদিনে না করে ধাপে ধাপে ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তাব করেছেন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা। এর ফলে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে বিভাগ কিংবা জেলাভিত্তিক জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।

বুধবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সংলাপে এ প্রস্তাব দেন সাংবাদিকরা। এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নেওয়ার প্রয়োজন থেকেই সংলাপ করা হচ্ছে। সংলাপের যে ফলাফল সেগুলো আমরা লিপিবদ্ধ করেছি। এরপর আমরা ইন্টারনালি এই মতামতগুলো বোঝার ও জানার চেষ্টা করবো।’

নির্বাচন কমিশনে তৃতীয় দফায় সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ শুরু হয় বুধবার সকালে। নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা এতে অংশ নেন। বৈঠকে ছিলেন—  নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, প্রথম আলোর আনিসুল হক, সোহরাব  হাসান, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডেইলি অবজারভারের অনলাইন ইনচার্জ কাজী আব্দুল হান্নান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাহবুব কামাল, ভোরের ডাকের সম্পাদক কে এম বেলায়েত হোসেন, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, প্রতিদিনের সংবাদের সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম, আজকের পত্রিকার সম্পাদক মো. গোলাম রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ডেইলি স্টারের এক্সিকিউটিভ এডিটর সৈয়দ আশফাকুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত, মানবকণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক  দুলাল আহমেদ চৌধুরী, আমার সংবাদের সম্পাদক  হাশেম রেজা, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার ।

একদিনে ভোট না করে ধাপে ধাপে ভোট গ্রহণের প্রস্তাব করে ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘সারা দেশে একদিনে কেন নির্বাচন করতে হবে? বিভিন্ন জেলা ভাগ করে নির্বাচন করতে পারলে ভালো হয়। পর্যায়ক্রমে কয়েকদিনে নির্বাচন করলে ভোট সুষ্ঠু করা সম্ভব। একেক জেলায় একেক দিন ভোটগ্রহণ হলে নির্বাচনের পুরো পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। বিভাগভিত্তিক জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা যেতে পারে। দেখা যাবে আওয়ামী লীগ কটি সিট পায়, আর  বিএনপি কটি সিট পায়।’

নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রস্তাব করে সাংবাদিক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘প্রয়োজনে সারা দেশে একদিনে নির্বাচন না করে ভাগ ভাগ করে নির্বাচন করতে পারেন। ফলে নির্বাচন কমিশন নিজেদের জনবলের মাধ্যমে কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।’

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে নিয়ে আসার উদ্যোগের কথা বলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে অবশ্যই বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে উদ্যোগ নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই। কারণ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার দায়িত্ব ইসির।  বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সবার আগে সাধারণ জনগণকে আস্থায় আনতে হবে। সাধারণ জনগণকে আস্থায় আনতে না পারলে গ্রহণযোগ্য ভোট হবে না। সব দলকে নির্বাচনে আনার পাশাপাশি জনগণকেও আস্থায় এনে ভোটের মাঠে আনতে হবে।’

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন