নির্বাচনে অংশ নিতে কাউকে জোর করা সম্ভব নয়: সিইসি

নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে কাউকে জোর করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ এবং তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টাই ইসির আগামীর লক্ষ্য উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘কে নির্বাচনে অংশ নেবে, কে নেবে না; সেটা ফোর্স করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তবে ইসির দায়িত্ব— আহ্বান করা যে, আপনারা আসেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনে অংশ না নিলে কিন্তু গণতন্ত্র বিকশিত হবে না।’

সোমবার (১৮ এপ্রিল) ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে সংলাপের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অনেক বিধান আমাদের অনুকূলে থাকলেও তা প্রয়োগের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখতে যা যা করতে হয়, তা তা করতে হবে। আমাদের আইনে পর্যাপ্ত বিধান আছে। নির্বাচন সম্পর্কিত তেমন অনিয়মের তথ্য এলে আমাদের দায়িত্ব হবে সেই নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া; এটা আমাদের দায়িত্বের অংশ।’

সংলাপ শেষে সিইসি আরও বলেন, ‘সকলকে চেষ্টা করতে হবে এটকা সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য। আমরা অর্থহীন সংলাপ করছি না।’

তিনি বলেন, ‘সংলাপে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে কথা এসে। আমরা ইতিমধ্যে এ নিয়ে কয়েকটি মিটিং করেছি। যেহেতু বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, অনেকে পক্ষে বলেছেন। ইভিএমের যে সুবিধাটা সেখানে পেশিশক্তির ব্যবহার হ্রাস করতে পারে, যেখানে সিল দিয়ে ব্যালট বাক্স পূরণ করা যায় না। কাজেই ইভিএমের ভালো দিক আছে। আমরা ইভিএম নিয়ে স্টাডি করছি, যেটা জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেছেন।’

নির্বাচনে কেউ আসলো কি আসলো না, কেউ কেউ বলেছেন- এটা আমাদের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা বলেছেন, নির্বাচনে পক্ষ-প্রতিপক্ষ মাঠে থেকে ব্যালেন্স তৈরি করে। দলগুলো যদি তাদের লোকবল দিয়েই ভারসাম্য করতে পারে... নির্বাচনে যদি দু’টো পক্ষ থাকে, তবে দু’টো পক্ষকে খেলতে হবে, তাহলে নির্বাচনটা ওইদিক থেকে সহজ হয়।

স্বচ্ছতা খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভেতরে ক্যামেরা নিয়ে যদি আপনরাদের দেখাতে পারি, কেন্দ্রের ভেতরে যদি ক্যামেরা থাকে, বাইরে যদি মনিটরে দেখা যায়, এগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আমার সহকর্মীরাও বিশ্বাস করেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বিচরণ যদি থাকে, তারাও রিপোর্ট করতে পারবেন। একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য এই সমস্ত বিষয়ের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের সাধারণভাবে ওপেন হতে হবে, তথ্য দিতে হবে বলে মনে করি।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমাদের সৎভাবে দায়িত্ব পালনের স্প্রিহা, চেষ্টা আছে থাকবে। ব্যাপক অনিয়মের তথ্য আমাদের কাছে আসলে, সাহস নয়, আমাদের দায়িত্ব হয়ে যাবে যে, যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’ 

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করা। অনেক সময় কারচুপি হয়, সেটা রোধ করতে হবে। আমরা আমাদের সামর্থ, দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা করবো। দেশটা সকলের... আপনারাও আমাদের সহায়তা করবেন।’