পুলিশের সহায়তায় মায়ের কোলে ফিরলো অভিমানী কিশোরী

বাবা-মায়ের ওপর অভিমান করে এই প্রথম এসেছে ঢাকা শহরে। বয়স মাত্র ১৩ বছর। নাম সানজিদা আক্তার রিমি। পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। অপরিচিত এই শহরে এসে দিশেহারা হয়ে যায়। কোথায় যাবে, কী করবে কিছু্ বুঝতে পারছিল না। কয়েকজন মানুষ তাকে অন্য একটি বাসে তুলে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের আচরণ স্বাভাবিক মনে না হওয়ায় অপর এক পথচারী তাকে পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর ট্রাফিক পুলিশ তাকে প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং করে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দেয়।

রবিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ট্রাফিক-মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আশফাক আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বাস টার্মিনালের সামনে মেয়েটিকে এলোমেলো দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত লোকজন মেয়েটিকে বাসে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় একজন পথচারী দায়িত্বরত সার্জেন্ট মো. ইকরামুল আলমকে জানান। তিনি তখন মেয়েটিকে মহাখালী ট্রাফিক জোন অফিসে নিয়ে আসেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়, তার বাড়ি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানায়। শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাতে বিভিন্ন কারণে বাবা-মায়ের সঙ্গে সে অভিমান করে। পরের দিন ভোর সাড়ে ৫টায় সে একা চন্দ্রা মোড় থেকে মহাখালী বাস টার্মিনালে চলে আসে। এটাই তার প্রথম ঢাকা আসা। মহাখালী বাস টার্মিনালে নেমে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে সে।

পুলিশ কমিশনার আশফাক আহমেদ বলেন, ‘পরে তার কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা হয়। মেয়ের খোঁজ পেয়ে তারা তড়িঘড়ি রওনা দেন। তার বাবা-মা আসার আগ পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন উৎসাহমূলক এবং মোটিভেশনাল কথাবার্তা বলা হয়, যাতে সে স্বাভাবিক হয় এবং খুশিমনে বাবা-মার সঙ্গে ফিরে যায়। পরে তার মা-বাবা মহাখালী ট্রাফিক জোন অফিসে আসেন এবং মেয়েকে ফিরে পান। এ সময় তারা মেয়েকে ধরে কান্না করেন।’

মেয়েটির বাবা-মা মহাখালী ট্রাফিক জোনের পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদও জানান তারা।