কলাবাগানে মাঠ রক্ষার আন্দোলনকারী নারীকে তুলে নিয়েছে পুলিশ

রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার অন্যতম আন্দোলনকারী ও সমাজকর্মী সৈয়দা রত্নাকে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ। এর আগে মাঠে অর্ধশতাধিক পুলিশ মোতায়েন করে সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়। কলাবাগান থানা ভবন নির্মাণ হওয়ার কথা রয়েছে সেখানে।

রবিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে তেঁতুলতলা মাঠ থেকে ২০-২৫ জন নারী পুলিশ তাকে ধরে একটি পুলিশের ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এসময় সৈয়দা রত্না ফেসবুকে নির্মাণের প্রতিবাদে লাইভ করছিলেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে কলাবাগান থানার ডিউটি অফিসার এসআই মিজান একজনকে নিয়ে আসার তথ্য নিশ্চিত করলেও তাকে আটক নাকি গ্রেফতার করা হয়েছে; সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানাতে পারেননি। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবিষয়ে বিস্তারিত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানেন।’

এরআগে গত ৩১ জানুয়ারি মাঠটিতে তারকাঁটার বেড়া দিয়ে বেষ্টনী তৈরি করে পুলিশ। খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত জায়গাটিতে কলাবাগান থানার ভবন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে থানা ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী আন্দোলন করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠটির চারদিকে কয়েকটি রেইনট্রি ও মেহগনি গাছ, এক পাশে আবর্জনার ভাগাড়। এছাড়াও মাঠের এক কোণায় স্থানীয়দের লাশ গোসল করানোর ঘর রয়েছে।

জায়গাটি খোলা হওয়ায় সেখানে স্থানীয় শিশুরা সুযোগ পেলেই খেলায় মেতে ওঠে। বড়রাও নিয়মিত হাঁটেন, আড্ডা দেন। এটিই ঢাকার কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ নামে পরিচিত। তবে প্রস্তাবিত কলাবাগানের থানা ভবন হওয়ায় এটি এভাবে ব্যবহারের সুযোগ থাকছে না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, এটি সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত কোনও মাঠ নয়। স্থানীয় লোকজন মাঠের মতো করে ব্যবহার করে আসছেন।

গত বছরের ২৪ আগস্ট ঢাকা জেলা প্রশাসনের এক নোটিসে বলা হয়, ডিএমপির কলাবাগান থানার নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য এই সম্পত্তি সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ওই নোটিশে এই জমিকে পতিত জমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে কলাবাগানের বাসিন্দা, পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন, সমাজকর্মী, উন্নয়নকর্মী, সাংস্কৃতিককর্মী ও শিশু-কিশোররা এই নোটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।