ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে মানব পাচারকারীরা

২০২০ সালের মে’তে লিবিয়ায় এক মানব পাচারকারীর হাতে প্রায় ২৫ জন বাঙালি নির্মমভাবে নিহত হন। এর পরই পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালু হয়। এক পর্যায়ে অভিযান শিথিল হয়ে আসে। এর সুযোগে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে পাচারকারীরা।

গত মাসেই ইউরোপে অবৈধভাবে যাওয়ার সময় পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশি ধরা পড়ে লিবিয়ার পুলিশের হাতে। এদের একটি অংশকে ফেরত আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞ মো. শহীদুল হক বলেন, ‘মানবপাচার দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে ভুক্তভোগী ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য খারাপ।’

মানবপাচার কেন বাড়ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা যাচ্ছে তারাও জানে এতে অনেক ঝু্ঁকি আছে। তারপরও পিছু হটছে না। এর আরেকটি কারণ— মানব পাচারবিরোধী যে অভিযান ছিল সেটা কিছুটা থমকে গেছে। এতেও পাচারকারীরা তৎপর হয়েছে।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও দৃঢ়ভাবে এটি মোকাবিলা করতে হবে বলে তিনি জানান।

অপরাধীদের ধরতেই হবে

মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তি এখনও তুলনামূলক কম। তিন বছর আগে মানব পাচারকারীদের মামলা পরিচালনায় সাতটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, এ মামলায় ধরা পড়ে কম। মামলা হয় তারচেয়েও কম। শাস্তি হয় আরও কম।

তিনি বলেন, ‘চুনোপুঁটিদের ধরে লাভ নেই। যতদিন পর্যন্ত বড় যারা জড়িত তাদের ধরা না হচ্ছে, ততদিন এমনটা চলতে থাকবে।’

এর পেছনে দুর্নীতি একটি বড় কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের আইন ও নীতির কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে প্রয়োগে।

এ জন্য সরকারি কার্যক্রম প্রচারের প্রয়োজন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, মানবপাচার নিয়ে বিভিন্ন বৈঠক, সেমিনার করে মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে। সমাজে এই বার্তা যেন যায় যে, সরকার এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্রের মিলিত অপারেশনে বাংলাদেশিদের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হয়।

এ বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, এখানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সুযোগ আছে। যেসব দেশের ভেতর দিয়ে পাচার হয়, সেসব দেশের সরকার ও জাতিসংঘের উদ্যোগে মানবপাচারের বিরুদ্ধে অনেক কিছু করার আছে।