রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

‘বাংলাদেশকে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে’

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলছে এই যুদ্ধ। বিভিন্ন পক্ষের উদ্যোগ থাকলেও যুদ্ধ সহসা থামবে, এমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ওই অঞ্চল থেকে বিভিন্ন পণ্য বিশেষ করে গম ও সার বড় আকারে আমদানি করে বাংলাদেশ। এই দুটি পণ্য আমদানিতে বিকল্প দেশ নিয়েও চিন্তা করছে সরকার।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী প্রভাব এখনও পুরোপুরি বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। যুদ্ধ এখনও চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অবশ্যই এই দ্বন্দ্ব সহসা চলে যাবে না। যদিও যুদ্ধবিরতি হতে পারে।’

পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশকে সমন্বয় করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পক্ষ চেষ্টা করছে এবং এরই মাঝে তুরস্ক ও ফ্রান্স দ্বিপক্ষীয়ভাবে এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের একটি উদ্যোগ রয়েছে। সুতরাং, সবাই চেষ্টা করছে সেখানে যে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে, সেটির মোকাবিলা করার।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘যুদ্ধের ব্যাপ্তিটা অনেক বড় হয়ে গেছে এবং অবশ্যই রাশিয়ার সৈন্য এখন ইউক্রেনে অবস্থান নিয়েছে। এটি সহসা বন্ধ হয়ে যাবে—সে রকম মনে হচ্ছে না। এছাড়া ইউক্রেনের একটি গোষ্ঠী রাশিয়াকে সমর্থন করে। সুতরাং, তাদের ছেড়ে রাশানরা মনে হয় আসবে না।  অপরদিকে ইউক্রেনের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি আছে এবং তারা কীভাবে কী চিন্তা করছে, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের পরিস্থিতি গভীরভাবে অবশ্যই বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’

বাণিজ্য

ওই অঞ্চল বিশেষ করে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং বেলারুশ থেকে যেসব পণ্য আমরা ক্রয় করে থাকি, সেগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের কার্যকর বিকল্প চিন্তা করতে হবে বলে জানান মাসুদ বিনে মোমেন।

ওই অঞ্চল থেকে গম, সার এবং কিছু যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রফতানির বিষয়টি সে অঞ্চলের বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরা সমন্বয় করার চেষ্টা করছে। গম ও সার আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এখন আমরা চিন্তা করছি—এই দুটি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কী করা যায়, যদি সমস্যাটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।’

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার পুরোপুরি প্রভাব বোঝার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বেসরকারি খাতের সদস্যরা নিয়মিত পর্যালোচনা করছে। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কী কী বিকল্প হতে পারে, সেটি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে তিনি জানান।