আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে, দেশেও বাড়বে: বাণিজ্যমন্ত্রী

তেলের দাম ‘অস্বাভাবিক হারে’ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে, আমাদের দেশেও বাড়বে, এটা অঙ্ক।’

সোমবার (৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভোজ্যতেলের উৎপাদক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

এ সময় মন্ত্রী জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে তেলের দাম একবার বাড়ানো হয়। আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য বৃদ্ধির ফলে সাধারণভাবে রোজার মধ্যেই আরেকবার দাম পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘রোজার আগেই তেলের দাম বাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকার চায়নি রোজায় তেলের দাম বাড়ুক। সেই সময়ে কিছু অসাধু রিটেইলার ঘরে তেল মজুত করে রেখেছিল। সেজন্য দাম বাড়ানোর পরও বাজারে তেলের ক্রাইসিস হলো।’

সম্প্রতি দেশে তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও আন্তর্জাতিকভাবে দাম বাড়ার খবর খুব একটা প্রচার হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে গেলো কয়েক দিন ধরেই তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আন্তর্জাতিকভাবেই যে তেলের দাম বেড়েছে, প্রতিবেশী ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে তেলের দামের একটি তুলনামূলক চিত্র কেউ দেখাচ্ছেন না। আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক মাসে তেলের দাম কী পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে তা কেউ বলছেন না।’

ছবি: ফোকাস বাংলা

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এমনকি আজকে বাজারে যে তেলটা বিক্রি করছে, সেই তেলটা দুই মাস আগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় করানো হয়েছে। সেই তেলটা কী দামে আমদানি হয়েছে, সেটাও কেউ জানাচ্ছেন না; এগুলো যদি জানানো যেতো...। দাম বেড়েছে এটা সত্য, সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটাও সত্য। কিন্তু এর পেছনে আরেকটা সত্যও আছে। সেই সত্যটা যদি জানানো যেতো, তাহলে মানুষ বুঝতে পারতেন সমস্যাটা কোথায়।’

বাংলাদেশ নিজে তেল উৎপাদন করে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ তেল দেশে উৎপাদিত হয়। সেটাও বাদাম তেল, সরিষা তেলসহ সব মিলিয়ে। বাকি ৯০ শতাংশই নির্ভর করতে হয় আমদানির ওপর।’

অবৈধভাবে তেল মজুত করে বাজারে যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে বলেও জানান টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ‘খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে যেসব ব্যবসায়ী এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে চিহ্নিত। যখন যেখানে প্রয়োজন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং হবে। কিন্তু তারা সংখ্যায় লাখের ওপরে। এটা একটা সমস্যা।’