সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা

ভারতের কয়েকটি অঞ্চলে টানা বৃষ্টির কারণে দেশের দুই নদীর ৫ পয়েন্টের পানি আজ বিপৎসীমার ওপরে উঠেছে। গতকাল তিন নদীর ৪ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীগুলোর পানি কয়েকটি স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে সিলেট জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয়, হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মিজোরাম প্রদেশের কয়েকটি স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর  মধ্যে সুরমা, কুশিয়ারা, ভোগাই কংস, ধনু-বাউলাই, খোয়াই, মুহুরী নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

কেন্দ্র জানায়, কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১১০ থেকে বেড়ে এখন ১৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। একই নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি ১৯ থেকে বেড়ে ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এদিকে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১২৮ থেকে বেড়ে ১৪৩  সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে৷ এছাড়া এই নদীর আরও দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠেছে। এই নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি ২৯ এবং সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জের ছাতকে, ১৮৭ মিলিমিটার। যা গতকাল সোমবার ছিল সিলেটের জাফলংয়ে, ২২৬ মিলিমিটার।  এছাড়া সিলেটে ৭২, সিলেটের লালাখালে ১৭৫, কানাইঘাটে ৭০, শেওলায় ১২৭, জকিগঞ্জে ১১৯, জাফলংয়ে ১৬৭ এবং লাটুতে ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে সুনামগঞ্জে ১০২, সুনামগঞ্জে লরেরগড়ে ১০০, মহেশখোলাতে ৬১, কুড়িগ্রামে ৫৯ এবং নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে ৯৫ এবং নেত্রকোনার জারিয়াজঞ্জালে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। 

এদিকে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে আজ ৩৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা গতকাল ছিল ৪২৪ মিলিমিটার। এছাড়া আসামের গোয়ালপাড়ায় ৫৮, তেজপুরে ৪৮, দিব্রগড়ে ৫১, শিলচরে ১১০, ধুব্রিতে ৬১, অরুণাচলের পাসিঘাটে ৭০, মেঘালয়ের শিলংয়ে ৬১ এবং সিকিমের গ্যাংটকে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।