শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামির জামিনাদেশ প্রত্যাহার, দুই ডিএজিকে শোকজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার প্রধান আসামি ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে দেওয়া জামিনাদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার জামিন হওয়ার বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে অবহিত না করায় দায়িত্বরত দুই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে শোকজ করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ মে) অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ঈদের ছুটির আগে আদালতের শেষ কর্মদিবসে গত ২৮ এপ্রিল গোপনে হাবিবুল ইসলাম হাবিবের জামিন করানো হয়। তবে সে জামিনের বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আর অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে অবহিত করা হয়নি। পরে গত ২৪ মে জামিনের বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের নজরে আসে। এরপর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনা হয়।

এরপর বিশেষভাবে আদালত বসে গত ২৮ এপ্রিল হাবিবকে দেওয়া জামিন আদেশ প্রত্যাহার করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাশের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে আসামি হাবিবের কারামুক্তির পথ বন্ধ হলো বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর।

এদিকে ওই জামিনের বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের নজরে না আনার কারণে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে ওই সময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের (ডিএজি) কাছে তাৎক্ষণিক লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। জামিনের বিষয়টি কেন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে অবহিত করা হয়নি লিখিত ব্যাখ্যায় জানতে চাওয়া হয়। পরে তারা জানিয়েছেন, গত ২৮ এপ্রিল হাবিবুল ইসলাম হাবিবের জামিন বিষয়ে হাইকোর্ট শুধু রুল দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কর্মকর্তারা এই জামিন আদেশের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। আমরা বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছি।
 
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন সড়কযোগে ঢাকায় ফেরার পথে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এমনকি বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই মামলায় গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সাতক্ষীরার আদালত সাবেক এমপি হাবিবসহ বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেন। সে দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন আবেদন করেছিলেন হাবিব।