বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংরক্ষণের তথ্য চেয়েছেন হাইকোর্ট

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আইন অনুযায়ী সারা দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কতজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেছেন এবং কত শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে, তা ইউজিসির কাছে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কত টাকা গবেষণার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, সে তথ্যও আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ইউজিসি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন আকারে এসব তথ্য আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ শতাংশ গরিব, মেধাবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগের বিধান বাস্তবায়ন না করায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (৩০ মে) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আগামী ১৪ আগস্ট এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা করেছেন আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

পরে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য প্রণীত আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী, প্রতিবছর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং মেধাবীদের জন্য ৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করার কথা। সেটি করা হচ্ছে না। আইনের ৯ ধারার ৬ উপধারা অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের বরাদ্দ করা একটি সুনির্দিষ্ট অংশ গবেষণার জন্য রাখার কথা। এই হিসাবগুলো পাঠাতে হবে ইউজিসির কাছে। ইউজিসি পরে এই রিপোর্ট পাঠাবে মন্ত্রণালয়ের কাছে। পরে মন্ত্রণালয় পাঠাবে সংসদীয় কমিটির কাছে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সেটি জানার জন্য চেষ্টা করেছি। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কোনও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি কোটা ও গবেষণার কাজে টাকা বরাদ্দ করেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একই আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী, সরকারের কর্তব্য হচ্ছে—আইন ভঙ্গ হলে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল এবং সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হবে। ধারা ৪৯ অনুসারে এগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৫ বছরের কারাদণ্ড ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের ব্যবস্থা আছে। বিগত বছরগুলোতে এসব কারণে কোনও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা শুনিনি। এ কারণে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন এ রিট দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে আদেশ দিলেন হাইকোর্ট।’