আইডিআরএ চেয়ারম্যানের দেশত্যাগে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়।

আদালতে বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিনের পক্ষে আবেদন করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।

জানা গেছে, আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম. মোশাররফ হোসেন ২০১৭ সালের ৯ মে ‘লাভস অ্যান্ড লাইভ অর্গানিকস লি.’ নামে একটি কোম্পানি আরজেএসসিতে নিবন্ধন করেন। যার পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজে থেকে স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়াকে পরিচালক করেন।

এরপর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ‘গুলশান ভ্যালি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লি.’ নামে আরেকটি কোম্পানি নিবন্ধন করেন। এটারও পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিজে এবং স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়াকে পরিচালক পদে বসান।

কিন্তু আইডিআরএ আইন, ২০১০ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি কোনো কোম্পানির বা সংস্থার পরিচালক বা অন্য কোনো পদে নিযুক্ত থাকলে, তিনি কর্তৃপক্ষের সদস্য বা চেয়ারম্যান হতে পারেন না।

ওই আইনের ধারা ৭(৩)(খ) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি বিমা মধ্যস্থতাকারী বা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো সংস্থার বা ওই ধরনের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী হন বা তিনি কোনো কোম্পানি বা সংস্থার (সরকারি বা বেসরকারি) পরিচালক বা অন্য কোনো পদে নিযুক্ত থাকেন।

দুটি কোম্পানির পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় তথ্য গোপন করে আইডিআরএ আইন ২০২০ এর ৭(৩)(খ) ধারার লঙ্ঘন করে মোশাররফ চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন। তাই মোশাররফের পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন কোন কর্তৃত্ববলে পদে বহাল আছেন তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

পরে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে চান হাইকোর্ট। দুদক ও বিএফআইইউকে তা জানানোর নির্দেশ দেন আদালত।

ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে ড. এম মোশাররফ হোসেন ৪১ কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। এ কারণেই তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ ও বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।