বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা করছে: সেনাপ্রধান

বন্যাদুর্গতদের উদ্ধার তৎপরতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফি উদ্দিন আহমেদ। রবিবার (১৯ জুন) সিলেটে বন্যাদুর্গত এবং সেনাবাহিনীর উদ্ধার তৎপরতা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। পরিদর্শনের সময় তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করেন।

সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, ‘এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যেটা কাটিয়ে উঠতে আমরা সবাই সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুধু নয়, সরকারের সব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আজকে এখানে এসেছি। আমাদের সেনাবাহিনী আর অন্য যারা এখানে মোতায়েন রয়েছে, তারা অনেক কষ্ট করছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। দুর্গম এলাকায় গিয়ে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করছে। তাদের মধ্যে খাবার ও চিকিৎসাসেবা অন্যান্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে।’

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফি উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমি অন গ্রাউন্ডে দেখতে এসেছি, একাজগুলো তারা কত কষ্ট করে করছে। সেনাসদর থেকে আর কী ধরনের সহায়তা করা যায়, সেনাসদর থেকে পরবর্তী সময়ে সুন্দরভবে সাফল্য মণ্ডিতভাবে করতে পারে, এই উদ্ধার তৎপরতার কর্মকাণ্ড।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘শুধু সিলেট এরিয়া নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল কুমিল্লা অঞ্চল, ময়মনসিংহ অঞ্চল সাভার অঞ্চল— সব অঞ্চল থেকে আমরা ফোর্স পাঠাচ্ছি। এছাড়া অন্যান্য সরঞ্জামাদি পাঠাচ্ছি। অনেককেই আমরা স্ট্যান্ডবাই করে রেখেছি। খাদ্য এবং চিকিৎসার অন্যান্য সামগ্রী যা যা আমরা পারছি, নিজেদের সোর্স থেকে পাঠাচ্ছি। অনেকেই আগ্রহ দেখিয়েছেন— আমাদের কাছে ত্রাণ দিতে চাচ্ছেন। আমরা সেগুলো অর্গানাইজ করার চেষ্টা করছি। যদি তা সম্ভব হয়, তাহলে সেগুলো আমরা মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেবো।’

তিনি বলেন, ‘বন্যা দুদিনেই চলে যাবে, সেরকম কোনও লক্ষণ আমরা দেখছি না। হয়তো একটু সময় নেবে। বন্যা পরিস্থিতি ইমপ্রুভ করার পরেও বড় ধরনের ক্ষতি আমাদের মধ্যে রেখে যাবে। বন্যা পরবর্তী সময়ে অনেক কার্যক্রম আসবে সেগুলোর জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

শফি উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করি, এ দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারবো। এখানে যদি সহযোগিতার মনোভাব না থাকে, তাহলে কাজে পিছিয়ে যাবো। সেনা সদস্যদের সর্বাত্মক ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকার ও জনগণের প্রত্যাশা পূরণে যা যা করণীয় তা সব করবো। প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। উনার সার্বিক সহায়তা আমরা পাচ্ছি। সেনাবাহিনী তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়ে কাজ করে যাবে। যা যা দরকার তা করবে।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘সিলেট আসতে পেরেছি পরে আবারও সুনামগঞ্জ যাবো। আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টার উড়তে পারে না। যখনই আবহাওয়া ঠিক হবে পরবর্তীতেকালে আমি সুনামগঞ্জ যাবো। বন্যায় যারা আটকে আছে, যেখানে আটকে আছে, তাদের উদ্ধারে আমরা কাজ করে যাবো। আপনারা জানেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী আটকে পড়েছিল, সেনা সদস্যরা তাদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও এখানে ঘুরতে এসে আটকে গিয়েছিল, তাদেরকেও উদ্ধার করতে পেরেছি। অনেক দুর্গম এলাকা থেকে লোকজনদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। অনবরত বৃষ্টির নানান প্রতিবন্ধকতা জয় করে যতটুকু পারি, আমরা চেষ্টা করছি।’