ড. কামালের চেম্বারের বিরুদ্ধে কর দাবির নোটিশে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা

গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের ল চেম্বার ‘ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’-এর কাছে ছয় কোটি টাকা কর ফাঁকির দাবির বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দেওয়া নোটিশের কার্যক্রমের ওপর ৩ মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস থেকে এনবিআরের শুল্ক দাবি সংক্রান্ত কর আপিলেট ট্রাইব্যুনালের আদেশ কেন আইনি কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। কর আপিলেট ট্রাইব্যুনালের (সার্কিট বেঞ্চ-২) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কর অঞ্চল-১৫-এর ডেপুটি কমিশনারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ড. কামাল হোসেনের চেম্বারের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২১ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল-সহ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রমজান আলী শিকদার ও মোস্তাফিজুর রহমান খান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।

পরে আইনজীবী রমজান আলী শিকদার সাংবাদিকদের জানান, আমরা আগেই ট্যাক্সের সব অর্থ পরিশোধ করেছি। নিয়ম অনুসারে, এনবিআরের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল করতে হলে মোট দাবির ওপর ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হয়। সেই অনুযায়ী ৮৩ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলাম। এরপর আমরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের অ্যাসেসমেন্টের পর নির্দেশনা অনুযায়ী আরও ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা জমা করি। ফলে দাবির ১০ শতাংশ টাকা পরিপূর্ণ হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের বৈধতা প্রশ্নের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২০১৮-১৯ কর বর্ষের কর আদায় সংক্রান্ত কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।

এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক ডেপুটি কমিশনার ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর এক নোটিশে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস থেকে ৬ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা আয়কর এবং আরও ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা সুদ দাবি করেন।

তবে ওই দাবির পূর্বেই কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি ৪ লাখ ৩ হাজার ৪৯৫ টাকা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে। কিন্তু ওই অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড  ২০ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ২১৯ টাকা মোট আয় দেখিয়ে ৬ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা আয়কর এবং আরও ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা সুদ দাবি করে এনবিআর।

রাজস্ব বোর্ডের ডেপুটি কমিশনারের ওই কর দাবির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। শুনানি শেষে ২০২০ সালের ২৫ জুন আপিলটি খারিজ করে দেওয়া হয়।

এরপর যুগ্ম কমিশনারের ওই আদেশের বিরুদ্ধে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ট্যাক্সেস আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করে। তবে সেই আবেদনটিও খারিজ হয়ে যায়। এরপর কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের পক্ষে আইনজীবী শরীফ এম এন ইউ ভূইয়া গত ২৪ মে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।