দুই সপ্তাহ বন্যার শঙ্কা নেই

চলতি জুলাই মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে বন্যার শঙ্কা নেই। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে উজানের অববাহিকাগুলোর অনেক স্থানে ভারী বৃষ্টিপাত হলেও তিস্তা ছাড়া কোনও নদীর পানি বাড়বে না। ফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। নতুন করে কোনও এলাকা প্লাবিত হওয়ায় শঙ্কাও নেই।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, আগামী দুই সপ্তাহ বৃষ্টি কম হতে পারে। তবে কোথাও কোথাও হালকা বা মাঝারি বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। তবে তা টানা হবে না। ফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়, আগামী ২ সপ্তাহে বিশেষ করে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে উজানের অববাহিকাগুলোর অনেক স্থানে ভারী বৃষ্টিপাত ঘটার সম্ভাবনা কম।

এদিকে দেশের প্রধান নদনদীগুলোর জন্য অববাহিকাভিত্তিক ধারণাগত পূর্বাভাসে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বর্তমানে ধীর গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ও উজানের অববাহিকায় ভারতের অরুণাচল, আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের উপর বর্তমানে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় পরিবর্তিত হওয়ার ফলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত প্রবণতা কমে এসেছে। এর ফলে জুলাই মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদীর পানি কমতে পারে। এই সময়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এছাড়া এই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ধরলাসহ অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। এই সময়ে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে এই সময়ে উজানের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে স্বল্পমেয়াদী ভারী বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে তিস্তা নদীর পানি সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।

গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি  বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা জুলাই মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এই সময়ে পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

মেঘনা অববাহিকার উজানের প্রধান নদীগুলোর পানি বর্তমানে কমছে তবে কয়েকটি স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দেশের উজানে ভারতের মেঘালয় প্রদেশ ও বরাক অববাহিকায় ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসার সম্ভাবনা থাকায় পরবর্তী সপ্তাহে সুরমা-কুশিয়ারাসহ সকল প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি কমতে পারে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে এই সময়ে ভারতের মেঘালয় প্রদেশে বিচ্ছিন্ন ভাবে ভারী বর্ষণের কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি সময় বিশেষে স্থিতিশীল থাকতে পারে।

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী ২ সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকা অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হতে পারে। তবে এই সময়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী ২ সপ্তাহে উপকূলীয় অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হতে পারে, তবে এই সময়ে  ঘূর্ণিঝড় বা  জলোচ্ছ্বাস পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুইয়া বলেন, আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই সপ্তাহ যেসব নদীর পানি কমছে তা কমা অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সিলেটসহ বেশিরভাগ এলাকার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। তবে উজানে কিছু বৃষ্টি হতে পারে। এতে তিস্তার পানি বাড়তে পারে। তবে এতে নতুন করে কোনও এলাকা প্লাবিত হবার সম্ভাবনা নেই।