ট্রেনের টিকিট বিক্রি শেষ হলেও পরের দিনের জন্য লাইনে!

রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে ঈদুল আজহা উপলক্ষে রবিবার (৩ জুলাই) দুপুর নাগাদেই তৃতীয় দিনের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শেষ। কিন্তু কাউন্টারে টিকিট প্রত্যাশীদের তখনও দীর্ঘ লাইন।

নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের কাউন্টারের সামনে সারিতে রয়েছেন রাজধানীর শান্তিনগরের বাসিন্দা আবদুর রহিম। তিনি চিলাহাটিতে গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সবার সাথে ঈদ করতে চান। ট্রেনের টিকিট শেষেও কেন দাঁড়িয়ে আছেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘আগামীকালের টিকিটের জন্য।’

তার দাবি তিনি শনিবার সকাল ৯টায় এ কাউন্টারে এসেছেন। গত ২৬ ঘণ্টা তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, 'ট্রেনের টিকিট ছাড়া ঢাকা ছাড়বো না। গত রোজার ঈদেও টিকিট পাইনি, তাই বাড়ি যাইনি। আমার বউ আর মেয়ে বাস ভ্রমণ করতে পারেন না। আমার তিনটা টিকিট লাগবেই।’

তিনি জানিয়েছেন, তিনি আজ রবিবার (৩ জুলাই) ৯৭ নম্বর সিরিয়ালে ছিলেন। সিরিয়াল ধরে রাখতে সারাদিন পাউরুটি, কলা আর পানি খেয়েছেন। রাতে এখানেই পেপার বিছিয়ে ঘুমিয়েছেন।

তিনি বলেন, সারাদিন সিরিয়ালে থাকতে হয়। কখনও টয়লেটে গেলেও লাইনের অন্যদের বলে যেতে হয়। সারাদিন গোসল করতে পারিনি। আর রাতে পেপার বিছিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। এখানে যে নোংরা পরিবেশ, কাঁথা-কম্বল কিভাবে আনবো।’ 

কেরানীগঞ্জ থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মো রাফিউল যাবেন নীলফামারীর। তার দাবি, তিনিও শনিবার ৯টায় এসেছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। আজ ছিলেন ৭৪ নম্বর সিরিয়ালে তাই টিকিট পাননি। তারা চার কলিগ মিলে যাবেন গ্রামের বাড়িতে। 

তিনি বলেন, ‘আমার অফিসের ডিউটি রাত ১০টায় আমি দুপুর ২টার দিকে চলে যাবো। আমার আরেক কলিগ এসে এখানে লাইনে দাঁড়াবে। আবার আমি কাল সকালে আসবো।' 

এত ভোগান্তির পরও ট্রেনের টিকিট কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে বাসযাত্রায় শান্তি নাই, জ্যামে বসে থাকতে হয়। ট্রেনে জ্যাম নাই, নির্দিষ্ট টাইমে পৌঁছে যায়। আমি চারটি টিকিট নেবো। চেষ্টা করবো এসি কেবিনের, এসি টিকিট না পেলে চেয়ার কোচের টিকিট কাটবো।’