হাট শেষ, বিক্রি হয়নি বেশিরভাগ বড় গরু

ঈদুল আজহার আগের দিন শনিবার শেষ বিকালেই বেচাকেনা শেষ করে রাজধানীর পশুর হাট থেকে বিদায় নিয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা গরুর ব্যাপারী ও খামারিরা। বেশিরভাগ ব্যাপারী মুখে হাসি নিয়েই ছাড়তে পেরেছেন হাট। তবে হাসি নেই বড় গরুর মালিক ও খামারিদের মুখে।

পঞ্চগড়ের করতোয়া এগ্রো ফার্মের মালিক শাহাবুদ্দিন সাতটি বড় গরু নিয়ে গত ২৯ জুন এসেছিলেন ভাটারার সাঈদনগর হাটে। সবচেয়ে বড় গরুটির নাম রেখেছিলেন শাহেনশাহ, যার ওজন ১৫ মন। দাম হাঁকিয়েছিলেন ১২ লাখ।

শাহাবুদ্দিন বলেন, শাহেনশাহ বিক্রি হয়নি। কেউ ১০ লাখও দাম বলেনি। সর্বোচ্চ একজন ৯ লাখ বলেছিল। সাতটির মধ্যে মাত্র দুটি গরু পৌনে চার লাখ টাকায় বিক্রি করলাম।

সবাই যখন বিদায় নেওয়ার গোছগাছ করছিল তখন তিনি শেষ বিকালে মুখ গোমরা করে বসেছিলেন হাটে। তিনি জানান, ৫০ হাজার টাকায় ট্রাক ভাড়া করে গরু এনেছিলেন হাটে, এখন আবার ৫০ হাজার টাকা খরচ করে গরুগুলো বাড়ি নিতে হবে। শামিয়ানার খরচ ১০ হাজার, আর থাকা-খাওয়া ও গো-খাদ্যের খরচ আছে। তাছাড়া শারীরিক পরিশ্রম তো আছেই। সব মিলিয়ে হতাশ তিনি।291743130_1826284347763096_8280693115500259545_n

একই ঘটনা ঘটেছে প্রায় সব বড় গরুর মালিকের ক্ষেত্রেই। হাট ঘুরে দেখা যায় শুধু বড় গরুগুলোই অবিক্রীত পড়ে আছে। আর কিছু ছাগল।

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী আবদুস সালাম দুটি ১৩ মণ ও ১৫ মণের ওজনের গরু নিয়ে এসেছিলেন শুক্রবার। ঈদুল আজহার আগের দিনের পড়ন্ত বিকালেও বিক্রি হয়নি গরু দুটি।

তিনি বলেন, দাম যেহেতু পাচ্ছি না, ভাবলাম ৭ লাখে ছেড়ে দিবো। কিন্তু ৬ লাখও কেউ বলছেন না। দুইটা আনতে ১৮ হাজার টাকা ট্রাক ভাড়া নিছে। এখন আবার সমান ভাড়া দিয়ে এলাকায় ফিরবেন তিনি। সালাম বলেন, 'খরচ করে দুদিন থাকলাম।  দুই রাত ঘুমাতেও পারিনি।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এসেছেন মো. মিঠু। তার ১৮টি গরুর মধ্যে মাঝারি আকারের গরুগুলো বিক্রি হয়েছে, কিন্তু বড় দুটো বিক্রি হয়নি। তিনি বলেন, 'আমি ৫ তারিখ থেকে হাটে আছি। বড় দুটোর দাম কেউই বলে না।'

তাদের মতো জন পঞ্চাশেক গরুর খামারি ও ব্যবসায়ীর দেখা মেলে এই হাটে, যাদের গরু বিক্রি হয়নি।292896675_605306860911933_7961874328225108392_n