সরকারি আইনি সহায়তা আরও গতিশীল হবে: আইনমন্ত্রী

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও সেবাবান্ধব করা হবে। এজন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।

শনিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে লিগ্যাল এইড প্যানেল আইনজীবীদের এডিআর কর্মশালা এবং জেলাভিত্তিক সেরা প্যানেল আইনজীবীদেরকে সম্মাননা স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এবং বাংলাদশে ইউএসএইড-এর প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিটি নামের প্রোগ্রাম এ কর্মশালার আয়োজন করে।

আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং আর্থ-সামাজিক কারণে বিচারপ্রাপ্তিতে অসমর্থ জনগণকে আইনগত সহায়তা প্রদানকল্পে জাতিকে উপহার দেন ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০'। এর মাধ্যমে দেশের অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আইনি অধিকার নিশ্চিতকরণের যাত্রা শুরু হয়।

আনিসুল হক বলেন, বর্তমান সরকার আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে গতিশীল ও সেবাবান্ধব করে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঢাকায় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে সুপ্রিম কোর্টসহ সকল জেলায় লিগ্যাল এইড অফিস প্রতিষ্ঠা করেছে। উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আইন সংশোধনের মাধ্যমে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসকে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০১৯ সালে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে লিগ্যাল এইড অফিসারের কাজকে বিচারিক কর্ম হিসেবে গণ্য করেছি। এতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি এখন বিচারিক কাজ।’

এছাড়া, জেলা পর্যায়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ আইনজীবীদের প্যানেলভুক্ত করার মাধ্যমে ভিকটিমের আইনি সহযোগিতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্যানেল আইনজীবীরা যাতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেজন্য তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত ২ হাজার ৬৬৯ জন প্যানেল আইনজীবীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা কর্তৃক নির্বাচিত প্রকল্প এলাকার সেরা ৪০ প্যানেল আইনজীবীর জন্য দিনব্যাপী এডিআর বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য, লিগ্যাল এইড প্যানেল আইনজীবীদের কাজকে দেশব্যাপী প্রচার করা।

তিনি বলেন, এখন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতেও বিচারপ্রার্থীকে আইনি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিচারক, আইনজীবী, সরকারি-বেসরকারি সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন পেলে সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম আরও  গতিশীল ও শক্তিশালী হবে।

অনুষ্ঠানে জেলাভিত্তিক ৪০ জন সেরা প্যানেল আইনজীবীর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন আইনমন্ত্রী।

আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদশে ইউএসএইড-এর ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড গভর্ন্যান্স অফিসের পরিচালক ক্রিস্টিন ওয়েলস এবং প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিটি’র চিফ অব পার্টি হিথার গোল্পস্মিথ বক্তৃতা করেন।