কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনের নৈশ বাসে এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ৬৬টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম- সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই কমিটি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর থেকে ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী নৈশ বাসে এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। জানা য়ায়, গত ২ আগস্ট প্রাগপুর থেকে ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনের বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি দিবারাত্রি হোটেল থেকে খাবার বিরতি শেষে যাত্রা শুরু করলে পথে ১০-১২ জন তরুণ যাত্রীবেশে বাসে ওঠে এবং বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলে। চালককে জিম্মি করে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা, স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। এ সময় বাসে থাকা এক নারী যাত্রীকে ৪ তরুণ দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ ধরনের বর্বর ঘটনায় সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
এতে আরও বলা হয়, আমরা দেখেছি যে, বিগত বছরগুলোতেও বাসে বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ইতোপূর্বে এই একই রুটে ছোঁয়া পরিবহন বাসে এমন একটি ঘটনার কথা আমাদের সবার জানা। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহের এ সড়কটি নারীর জন্য বরাবরই অনিরাপদ। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মধুপুরের বনাঞ্চলের নির্জন এলাকায় গত ১৩ বছরে চারবার চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন জন ধর্ষণের শিকার হন। খুন হয়েছেন দুই নারী। অপরাধীরা সহজেই পালাতে পারছে বলে বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, গণপরিবহন, রাস্তাঘাটসহ সর্বত্র নারী ও কন্যার শিশুর ওপর সহিংসতার ঘটনা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ঘটনাটিতে সড়ক পরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন ধরনের আশঙ্কা তৈরি হলো।
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি গণপরিবহনে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে নিরাপদ যাত্রী পরিবহন ও সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি গণপরিবহন মালিক ও ড্রইভারসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধতার মধ্যে আনার জন্য এবং যাত্রীবাহী নৈশ বাসে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে এ ঘটনার শিকার যাত্রীদের সুচিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছি।