টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ, গ্রেফতার আরও ১০

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় আরও ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রবিবার (৭ আগস্ট) রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে সোমবার (৮ আগস্ট) সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

র‌্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, বাসে ডাকাতির এই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হলো রতন নামে এক ব্যক্তি। র‌্যাবের অভিযানে রতনসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই বিভিন্ন পেশার আড়ালে মহাসড়কে যাত্রীবেশে বাসে উঠে যাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি করতো।

গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাস নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়ে সিরাজগঞ্জ এলাকা থেকে তিন দফায় ১০-১২ জন যাত্রী তোলে। ছদ্মবেশী ওই যাত্রীরা দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাসটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চালক, চালকের সহযোগী ও যাত্রীদের হাত, পা, চোখ বেঁধে তাদের সব লুটে নেয়। এ সময় বাসে থাকা এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে বাসটি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী হেকমত মিয়া বাদী হয়ে মধুপুর থানায় বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় একটি মামলা করেছেন।

আলোচিত এই ঘটনার পর টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা প্রথমে ডাকাতির সময় বাসের চালক হিসেবে দায়িত্বপালনকারী ডাকাত দলের সদস্য রাজা মিয়াকে গত ৪ জুলাই গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৫ জুলাই শুক্রবার আব্দুল আউয়াল ও নুরনবী নামে দুই জনকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ। তিন ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতারের পর টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন, ডাকাতির ঘটনায় ১০-১২ জন অংশ নিয়েছিল। তারা সবাইকে শনাক্ত করেছেন। এর মধ্যেই র‌্যাবের অভিযানে ১০ ডাকাতকে গ্রেফতারের খবর এলো।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি করে এমন বেশ কয়েকটি চক্র তৎপর রয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশও মাসদুয়েক আগে এই চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করে। তারা সবাই গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় থাকতো। বিভিন্ন পেশার আড়ালে তারা রাতে একযোগে যাত্রী বেশে টার্গেটকৃত বাসে উঠে যাত্রীদের ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নিতো। গ্রেফতার হওয়া ডাকাত সদস্যদের মধ্যে অনেকেই একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে গেলেও জামিনে বের হয়ে এসে আবারও একই পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে।