‘মাসুদ রানা’ সিরিজের মালিকানা প্রশ্নে আপিলের অনুমতি

পাঠকপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানা কাজী আনোয়ার হোসেনের নয় মর্মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আপিলটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই দুই সিরিজের বই কেনা-বেচার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে সোমবার (৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে কাজী আনোয়ার হোসেনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা ও ব্যারিস্টার এ বি এম হামিদুল মিসবাহ। শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইফতাবুল কামাল অয়ন।

এর আগে শেখ আব্দুল হাকিম ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক স্বত্ব দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করেন।

এরপর ২০২০ সালের ১৪ জুন কপিরাইট অফিস শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়। এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কাজী আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করে।

রুলে এখতিয়ারবহির্ভূত হওয়ায় কপিরাইট অফিসের ওই সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস এবং কপিরাইট বোর্ডকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেছিলেন, ‘শেখ আবদুল হাকিমের দাবি করা মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মধ্যে একটি এবং কুয়াশার ৫০টি বইয়ের মধ্যে ৬টিতে লেখক হিসেবে তার নামে কপিরাইট করা আছে। বাকিগুলোর কপিরাইট করা না থাকলেও সেগুলো যে তার লেখা, তা তিনি প্রমাণ করেছেন। তবে কপিরাইট অন্তর্ভুক্তির কারণে তাকে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। এরপর প্রতিটি বইয়ের লেখক হিসেবে তার নাম যাওয়ার পাশাপাশি, কপিরাইটও তার হয়ে যাবে।’

পরে ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর পাঠকপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানা কাজী আনোয়ার হোসেনের নয় মর্মে রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক স্বত্ব জব্দই থাকবে বলে রায়ে বলা হয়। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ।