সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড: কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের

সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের খুঁজে বের করতে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিক্যাল বিভাগের একজন অধ্যাপকের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিবকে এ নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত-আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মামলার বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (১০ আগস্ট) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব।

এর আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ লাখ টাকা প্রদান ও ঘটনার তদন্ত চাওয়া হয়।

গত ২৯ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এ রিট দায়ের করা হয়। রিটের পক্ষের আইনজীবীরা হলেন— ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব, অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান ও অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল।

রিট আবেদনে বলা হয়, গত ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সিতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনে অর্ধশত মানুষ নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। খবরে প্রকাশ স্মার্ট গ্রুপের বিএম কনটেইনার নামক কোম্পানির দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘোষণা ছাড়াই মজুত করার কারণে আগুনে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

আরও বলা হয়, ফায়ার সার্ভিসের কাছে মজুত করা রাসায়নিক পদার্থগুলোর প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকায় অনেক উদ্ধারকর্মী নিহত ও আহত হয়েছেন।

একইসঙ্গে রিটে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

বিএম কনটেইনার বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২০ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটে। এতে প্রায় ৪৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন অনেকে।

পরে ওই ঘটনায় বিবাদীদের প্রতি ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তবে সে নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।