লঞ্চ-ফেরির ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব ঠেকালো সরকার

সরকারি-বেসরকারি লঞ্চ ও ফেরির ভাড়া সমন্বয়ের প্রক্রিয়ায় আছে। এ ক্ষেত্রে মালিকরা ভাড়া দ্বিগুণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেও তা ৩০-৩৫ শতাংশে নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) রবিবার (১৪ আগস্ট) নৌ-মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠায়। তবে সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বাসের পর জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের অনুরোধ জানান লঞ্চ মালিকরাও। ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়ে নৌ-মন্ত্রণালয়ে তারা চিঠি পাঠালে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রমতে, লঞ্চ ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে রবিবার একটি বৈঠক হয়। তাতে শতভাগ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব থেকে সরে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে অবস্থান নেয় মালিকপক্ষ। এ নিয়ে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর ৩০-৩৫ শতাংশ নির্ধারণ হয়। এ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য নৌ-মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে মঙ্গলবার বা বুধবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, লঞ্চ ভাড়া ৩০ শতাংশ বাড়লে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে প্রথম ১০০ কিলোমিটারের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া দুই টাকা ৩০ পয়সার জায়গায় বেড়ে ৩ টাকা হবে। বিষয়টি নৌ-মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ’র একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

জানতে চাইলে লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, রবিবারের বৈঠকে লঞ্চ মালিকরা ছিলেন না। ৩০-৩৫ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের জানানো হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা ১০০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও পরে ৫০ শতাংশে অবস্থান নিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত সাড়ে ৪২ শতাংশে অনড় আছি আমরা। দেখা যাক কী দাঁড়ায়।

এদিকে, বিআইডব্লিউটিএ’র ফেরির ভাড়া ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব পুনরায় উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ৯ মাস আগে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হলে ফেরির ভাড়াও বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছিল।

বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা বলছেন, প্রস্তাবিত ভাড়া অনুমোদন পেলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটের ফেরিতে বড় বাস পারাপারে ২ হাজার ৫২০ টাকা লাগবে। যা এখন ২ হাজার ১০০ টাকা। ৫-৮ টনের ট্রাকের ভাড়া ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে হবে ১ হাজার ৫৬০ টাকা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। ওই দিন রাত ১২টা থেকে কার্যকর করা হয় বর্ধিত দাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর ৬ আগস্ট রাতে বাস ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিআরটিএ।