এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা ট্রাইব্যুনালে বদলি নয় কেন

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দুই অভিযোগের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বদলির জন্য প্রক্রিয়া গ্রহণ করার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মামলার বিবাদীদের এ রুরের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। 

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাবরিনা জেরিন ও এম. আব্দুল কাইয়ূম লিটন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

এর আগে গত ১ আগস্ট আলোচিত এ মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী এম. আব্দুল কাইয়ুম লিটন এ রিট দায়ের করেন। 

পরে রিটকারীর আইনজীবী জানান, গত বছরের জানুয়ারিতে ধর্ষণ মামলায় এবং চাঁদাবাজির মামলায় চলতি বছরের মে মাসে অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। এ কারণে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার চেয়ে মামলার বাদী ওই তরুণীর স্বামী এ রিট দায়ের করেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন এক তরুণী। এসময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র ওই তরুণীকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর করে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। সেদিন রাতেই ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে ৬ জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন জনকে আসামি করা হয়।

আসামিরা হলো− এম. সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকল আসামীকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ১৭ জনুয়ারি এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক চৌধুরী।

অভিযোগ পত্রে আসামিরা হলো- সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম। 

এছাড়াও এ ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়রা আদালতে পৃথক চার্জশিট দেওয়া হয়। পরে বাদীপক্ষ হাইকোর্টে আসলে দুটি মামলা এক আদালতে চলবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর চলতি বছরের ১১ মে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।