প্রাইভেট বাস দিয়ে চলছে হাতিরঝিলের চক্রাকার সার্ভিস

প্রাইভেট বাস সার্ভিসের নিবন্ধন নিয়ে চলছে রাজধানীর হাতিরঝিলের চক্রাকার বাসগুলো। নিয়ম অনুসারে প্রাইভেট বাসে সাধারণ যাত্রী পরিবহন বা গণপরিবহন হিসেবে চলার কোনও সুযোগ নেই। নিয়ম না মেনে হাতিরঝিলের পরিবহনগুলো চললেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। আর এ সুযোগে বিআরটিএ’র নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকার স্থলে ২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে চক্রাকার বাসগুলোতে। আর কিলোমিটার প্রতি ২.৫০ টাকার স্থলে স্টপেজ হিসেবে ভাড়া নিচ্ছে তারা।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানায়, হাতিরঝিলের চারপাশে ১৬ কিলোমিটার একমুখী সড়ক। ২০১৬ সালে এই সড়কে যাত্রী পরিবহনে ১০টি মিনিবাস দিয়ে চালু হয় এ সেবা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, হাতিরঝিলের রামপুরা, মধুবাগ, মগবাজার, এফডিসি, শুটিং ক্লাব এলাকায় বাস সেবা দেয় এইচআর ট্রান্সপোর্ট নামে একটি কোম্পানি। কোম্পানিটি বর্তমানে রাজউক থেকে অনুমতি নিয়ে হাতিরঝিলে মোট ২৩টি বাস চালাচ্ছে।

সম্প্রতি হাতিরঝিলে সরেজমিন দেখা যায়, হাতিরঝিলের চক্রাকার পথের সব বাসের নাম্বার ঢাকা মেট্রো-স দিয়ে শুরু। যেমন ঢাকা মেট্রো-স-১১-০৩২০ এবং ঢাকা মেট্রো-স-১১ -০৩৫০। ‘ঢাকা মেট্রো-স’ সিরিজের বাসগুলো প্রাইভেট বাসের নির্দেশক।

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে ওই দুটি বাসের নাম্বার পরীক্ষা করা হয়। বিআরটিএ সূত্র জানায়, এগুলো ব্যক্তিগত সেবাদানকারী বাস হিসেবে বিআরটিএ’তে নিবন্ধিত। বাসগুলো এইচআর ট্রান্সপোর্ট ও নিটল মোটরস লিমিটেডের নামে নিবন্ধন করা।

বিষয়টি জানতে এই প্রতিবেদক রাজধানীর নিকেতনের ৯নং রাস্তায় ৭৭নং বাড়িতে অবস্থিত এইচআর ট্রান্সপোর্টের অফিসে গেলেও সেখানে উপস্থিত কেউই এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হালিমকেও পাওয়া যায়নি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানিয়েছেন, তাদের বাসগুলো প্রাইভেটের লাইসেন্স নেওয়া এবং তারা প্রতিদিন ১৮-২০ হাজার যাত্রী পরিবহন করেন। বাসগুলো মধ্যম ধরনের। এগুলো ৩৫-৪১ সিটের।

এ বিষয়ে বিআরটিএ’র মুখপাত্র ও পরিচালক (সড়ক নিরাপত্তা)  মাহাবুব এ রব্বানী বলেন, ঢাকা মেট্রো-স নির্দেশক বাসগুলো প্রাইভেট বাস। এ বাসের জন্য কোনও রুট পারমিট দরকার হয় না। সাধারণ যাত্রী পরিবহন বা গণপরিবহন হিসেবে এ ধরনের বাস ব্যবহার করা যাবে না। এ ধরনের ব্যবহার শাস্তিমূলক অপরাধ।’

হাতিরঝিলের চক্রাকার বাসের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,  আপনারা চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। তিনি দেখবেন কি করা যায়।'

এ ব্যাপারে হাতিরঝিল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (উন্নয়ন) বলেন, 'রাজউক হাতিরঝিলের দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকে এভাবেই চলছে। যদি আইনগত কোনও বিচ্যুতি থাকে আমরা দেখবো।'