‘মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারকে জড়ানোতে বেশি সচেষ্ট পিবিআই’

সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া অভিযোগ করেছেন, মিতু হত্যা মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত না করে সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে জড়ানোতে বেশি সচেষ্ট তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন—পিবিআই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মিথ্যা সাক্ষী সাজিয়ে স্ত্রী হত্যায় জড়িত প্রমাণ করে বাবুলের সাজা হয়তো দেওয়া যাবে, কিন্তু এই তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে মিতু হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে না।

গত ২ আগস্ট আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বরাবর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির বিচারের দাবিতে করা এক আবেদনে এসব বিষয় উল্লেখ করেন তিনি।

ওয়াদুদ মিয়া আবেদনে বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বাবুল আক্তার দোষী সাব্যস্ত হলে আমি মেনে নেবো। পিবিআই বাদে অন্য যেকোনও সংস্থা দিয়ে পুরো ঘটনা নতুনভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি করেন তিনি।

আবেদনে তিনি অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালে বাবুল আক্তার যখন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালিতে এসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তখন বর্তমান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ডিসি নর্থ হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। মনোজ কুমার মজুমদার একসময় চট্টগ্রাম উত্তর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন। বনজ কুমার মজুমদারই মুসাকে বাবুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

তিনি অভিযোগ করেন, বাবুল আক্তার এসি কোতোয়ালি থাকার সময় অবৈধভাবে স্বর্ণ রাখার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে আটক করলে সেই ব্যবসায়ী দাবি করেছিলেন বনজ কুমার মজুমদারের এতে অংশীদারিত্ব রয়েছে। এ ঘটনায় বাবুল আক্তারকে ২০০৯ সালে বনজ কুমার হাটহাজারীতে বদলি করে দেন। ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত কক্সবাজারের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ইয়াবা ব্যবসা, ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি বাবুল যখন চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে অবৈধ স্বর্ণের গোডাউনে ৮ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করেছিলেন তখন অভিযান বন্ধ করে ফিরে আসতে বলেন। কিন্তু তার কথা না শোনায় বাবুলের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হন বনজ কুমার মজুমদার। এর কিছু দিন পর খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, গ্রেফতার থেকে এখন পর্যন্ত বাবুল আক্তারের ব্যাপারে পিবিআই প্রধানের ব্যক্তিগত আক্রোশের প্রকাশ এবং পেশাদারিত্বের চরম ঘাটতি রয়েছে।

বাবুল আক্তারের বাবা আবেদনপত্রে আরও জানান, বৌমার (মিতু) সঙ্গে আমার ছেলের সাংসারিক জীবন খুবই ভালো ছিল। ১৪ বছরের দাম্পত্য জীবনে মিতু নিজে কিংবা তার পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে কিংবা আমার পরিবারের কোনও সদস্যকে বাবুলের বিপক্ষেও কোন অভিযোগ করেনি। মিতু মারা যাওয়ার পরও দীর্ঘদিন কোনও অভিযোগ তারা তোলেনি। কিন্তু এখন একটি গ্রুপের ইন্ধনে তারা আমার ছেলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনছে।