সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের জামিন বহাল

দুর্নীতির মামলায় চার বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের ওপর কোনো আদেশ দেননি (নো অর্ডার) চেম্বার আদালত। এর ফলে তাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর)  বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। আদানতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।

এর আগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপপরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসিটিনির কর্তাব্যক্তিদেরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাতের দুটি মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৫ মে দুদক আদালতে উভয় মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ১৯ জনকে আসামি করা হয়। হারুন-অর-রশিদ ও রফিকুল আমিন দুই মামলাতেই আসামি।

গত ১২ মে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনকে ১২ বছর কারাদণ্ড এবং ২০০ কোটি টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়।

রফিকুল আমিনসহ মামলার ৪৬ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং তাদেরকে মোট দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে আসামি হারুন-অর-রশীদকে দেওয়া হয় চার বছরের কারাদণ্ড। সেইসঙ্গে তাকে সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে ছয় মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলো- মো. দিদারুল আলম, হারুন-অর-রশিদ, জেসমিন আক্তার (মিলন), জিয়াউল হক মোল্লা, সাইফুল ইসলাম রুবেল, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, ডেসটিনির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোফরানুল হক, পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ফারাহ দীবা, সাঈদ-উর-রহমান, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, জমশেদ আরা চৌধুরী, ইরফান আহমেদ, শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, এসএম আহসানুল কবির, জুবায়ের হোসেন, মোসাদ্দেক আলী খান, আবদুল মান্নান, আবুল কালাম আজাদ, আজাদ রহমান, মো. আকবর হোসেন সুমন, মো. সুমন আলী খান, শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মো. মজিবুর রহমান, ড. এম হায়দারুজ্জামান, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, কাজী মো. ফজলুল করিম, মোল্লা আল আমীন, মো. শফিউল ইসলাম, ওমর ফারুক, সিকদার কবিরুল ইসলাম, মো. ফিরোজ আলম, সুনীল বরণ কর্মকার ওরফে এসবি কর্মকার, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান তপন, সাকিবুজ্জামান খান, এসএম আহসানুল কবির (বিপ্লব), এএইচএম আতাউর রহমান রেজা, গোলাম কিবরিয়া মিল্টন, মো. আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমেদ, একেএম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. শফিকুল হক।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন এবং জামিন আবেদন জানান ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ। এরপর গত ৩০ আগস্ট দুর্নীতির মামলায় চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে সেই আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলো দুদক। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।