রাবি শিক্ষক হত্যায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ২ আসামির জামিন নাকচ

২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামি আবদুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপন আলীকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।

দণ্ডপ্রাপ্তদের জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের জামিন আবেদন কার্যতালিকা (কজ লিস্ট) থেকে বাদ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহীর শালবাগান এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয় রাবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে। এ ঘটনায় তার ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী ‘কোমলগান্ধার’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। ‘সুন্দরম’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়া অধ্যাপক রেজাউল করিম ভালো সেতার বাদক ছিলেন। জীবদ্দশায় তিনি একটি গানের স্কুল প্রতিষ্ঠারও চেষ্টা করছিলেন।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় সাত মাস তদন্তের পর ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ৮ জনকে আসামি করে তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজশাহীর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক রেজাউস সাদিক আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

ড. রেজাউল করিম হত্যা মামলার অভিযুক্ত ৮ আসামির মধ্যে খায়রুল ইসলাম বাঁধন, নজরুল ইসলাম ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান ও তারেক হাসান ওরফে নিলু ওরফে ওসমান এরইমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

পরে ২০১৮ সালের ৮ মে এ মামলায় রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার রাবি শিক্ষক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৩ জনের যাবজ্জীবনের রায় দেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো— শরিফুল ইসলাম (পলাতক) ও মাসকাওয়াত হাসান ওরফে আব্দুল্লাহ ওরফে সাকিব। 

আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো— নীলফামারীর মিয়াপাড়ার রহমত উল্লাহ, রাজশাহীর নারিকেলবাড়িয়া এলাকার আবদুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপন আলী।

পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা খালাস চেয়ে আপিল করে। তবে সে আপিল শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ থাকা অবস্থায় সাত্তার ও রিপন জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানায়।