তামাক ক্ষতি ছাড়া জীবনে কোনও অবদান রাখে না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

তামাক মানবজীবনে ক্ষতি ছাড়া অন্য কোনও অবদান রাখে না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার,  পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'তামাকের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য, অর্থ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক ক্ষতি ছাড়া জীবনে কোনও অবদান রাখে না। স্বাস্থ্যের গুরুত্ব সকলেই জানে। তাই তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ পরিহার করা অপরিহার্য। তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি।'

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা আহছানিয়া মিশন আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ব্যবস্থা’ আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সময়ের সাথে সকল কিছুই পরিবর্তন হয়। আইনও পরিবর্তন হতে পারে। প্রণীত খসড়াটি যেন দ্রুত আইনে রূপান্তরিত হয় সে চেষ্টা করতে হবে। তামাকের জন্য যে কোটি কোটি টাকা আয় হচ্ছে বলা হয় সেটা স্বাস্থ্য ক্ষতির তুলনায় কিছুই না। বলা হয় যে তামাক বন্ধ হলে ৮০ লাখ লোক বেকার হয়ে যাবে—এটা সত্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগ কাজ করছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে জন্য গাইডলাইন করা হয়েছে।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, তামাকের চাষাবাদ ও তামাক পণ্য উৎপাদন কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস করে৷ তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একাত্ম থাকলে আমরা যে কোনও সংকট মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করবোই। বর্তমান সংকট বৈশ্বিক—তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি বুঝে কাজ করতে হবে যেন কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে।

বিশেষ অতিথি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ. ফ. ম. রুহুল হক বলেন, তামাকের কোনও ভালো দিক নেই৷ তামাক নিয়ন্ত্রণ করলে দেশের স্বাস্থ্যখাত ভালো থাকবে।

সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার বলেন, বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত দেশ এবং ২০৪০ সালে আমরা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই৷ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আন্দোলন মানুষকে অধিক সচেতন করছে। আইন সংশোধন হলে এ আন্দোলন আরও ফলপ্রসূ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খন্দকার বলেন, তামাক বাদে অন্য ফসল উৎপাদনে সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করতে হবে।

উন্মুক্ত আলোচনায় বিশিষ্টজনরা তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করেন৷ দ্রুত খসড়া আইন পাশ ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানান।

আলোচনা অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. সেলিম রেজা, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের গ্রেন্ডস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া,  ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জুবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জালাল আহমেদ এবং দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।