সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতি: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের তারিখ ঘোষণা

ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানির জন্য আগামী ৬ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ। রবিবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এর আগে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়, কোনও সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হইবে।

পরে আইনের ওই ধারা চ্যালেঞ্জ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের  আইনজীবী সরোয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও মাহবুবুল ইসলাম রিট দায়ের করেন।

সে রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৪১ (১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না এবং ধারাটি কেন সংবিধানের ২৬ (১) (২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। সেই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।

গত ২৫ আগস্ট ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪১(১) ধারা অনুসারে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতির বিধান বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

পরে ওই রায় স্থগিত চেয়ে গত ৩১ আগস্ট আপিল আবেদন জানানো হয়। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রায়টি স্থগিত থাকবে বলে গত ২৩ অক্টোবর আদেশ দেন আপিল বিভাগ।