জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ নিষ্পত্তি, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মাদ (জিএম) কাদেরের বিরুদ্ধে নারী এমপি পদের মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগের আবেদন নিয়ে যথাযথ আদালতে (বিচারিক আদালত) যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হাইকোর্টের লিখিত আদেশ প্রকাশিত হয়েছে। একইসঙ্গে তদন্তে গাফিলতি হলে দুদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) আদেশ প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারীর আইনজীবী মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন।

এর আগে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের সইয়ের পর ৬ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশিত হয়।

রায়ে বলা হয়, রিট আবেদনটির শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না। বিবাদীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আদালতে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হলো।

এর আগে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ তদন্ত করার জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদুক) জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে আবেদন কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর পার্টির প্যাডে লিখে তিনি এই অভিযোগ দুদকে জমা দেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে জাতীয় পার্টির ৪ (চার) জন নারী সংসদ সদস্যের মনোনয়ন কার্যক্রমে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নেন জি এম কাদের। উৎকোচের বিনিময়ে ওই চার নারীকে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মসিউর রহমান রাঙ্গার মাধ্যমে মনোনীত নারী সংসদ সদস্যদের সঙ্গে জাতীয় সংসদের আসনে মনোনীত করার অঙ্গীকার ও অর্থ প্রদানের শর্তে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়। এ বিষয়ে একজন নারী সংসদ সদস্যের চুক্তি হয়, যা এরইমধ্যে মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছে। তিন জন সদস্য থেকে কমপক্ষে প্রতিজনে পাঁচ কোটি করে মোট ১৫ কোটি টাকা এবং প্রয়াত অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর কাছ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে জি এম কাদের গ্রহণ করেছেন, যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, দলীয় পদ-পদবি ব্যবহার ও প্রভাব খাঁটিয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মুত্যুর পর মসিউর রহমান রাঙ্গাকে ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট  একটি নামসর্বস্ব প্যাডে এরশাদ সাহেবের দস্তখত তৈরি করেন।

সেটি তদন্ত শুরু না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন মো. ইদ্রিস আলী। তবে আইনি নোটিশ পাওয়ার পরেও কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মাদ কাদেরের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য পদের মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগের আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়। তবে রিটের শুনানি শেষে সেটি নিষ্পত্তি করে দেন আদালত।