জলবায়ু পরিবর্তনে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি নেই: মিসরে তথ্যমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে বিশ্বরক্ষায় উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি, আন্তদেশীয় প্রাযুক্তিক সহযোগিতাসহ নানা ক্ষেত্রে তেমন অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ। পাশাপাশি এবার কপ২৭ সম্মেলনে বহু বিশ্বনেতার যোগদানকে আশাব্যঞ্জক বলেছেন তিনি।

মিসরের শান্তির নগর বলে খ্যাত শারম আল শাইখ শহরে ৬ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের ২৭তম আসরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ‘হাই লেভেল ইভেন্ট অন ক্লাইমেট অ্যাকশন’ সেশনে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

তিনি বলেন, ‘এ বছরের কপ সম্মেলনে পৃথিবীর বহু দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশ নিয়েছেন, যেটি প্যারিসে, কোপেনহেগেনে হয়েছিল, কিন্তু গত কয়েকটি কপে হয়নি। এটি আশার কথা। কারণ রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা যখন অংশ নেন, তখন গ্লোবাল কমিউনিটি বা বিশ্বসমাজ, পরিবেশকর্মী এবং আমাদের মতো হার্ড-ভিকটিম বা সর্বাধিক ভুক্তভোগীদের কথা তাদের কানে যায়। ফলে গ্লোবাল রেসপন্স ডেলিভারি করার বৈশ্বিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একটা নতুন মোমেন্টাম বা গতি সঞ্চারিত হয়। এটি ভালো দিক।’

পরিবেশবিজ্ঞানের শিক্ষক ড. হাছান বলেন, ‘প্রতিটি কপ সম্মেলন থেকে অনেক আশা নিয়ে আমরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যাই। যে আশার বাণীগুলো শোনানো হয়, সে অনুযায়ী পরবর্তী বছরে যে কাজগুলো হওয়ার কথা, সেগুলো যথাযথভাবে হয় না। এর সঙ্গে নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হয়েছে, যেটি হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এখন ফোকাসটা অন্যদিকে চলে গেছে, অর্থনীতি একটা টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।’

‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, এ বিষয়গুলো বহু আগে থেকে আলোচিত হচ্ছে কিন্তু বছরে ১০০ কোটি ডলার, যা ক্লাইমেট ফান্ড হিসেবে দেওয়ার কথা ছিল, তা আশাই থেকে গেছে, আরও নানা ইস্যুতেও তেমন অগ্রগতি হয়নি’ উল্লেখ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের অন্যতম দাবি ছিল টেকনোলজি ট্রান্সফার। অর্থাৎ যেসব দেশে এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি নেই, সেসব দেশে প্রযুক্তি সরবরাহ করা। এ বিষয়েও তেমন অগ্রগতি নেই।’

ঢাকা থেকে সোমবার (৭ নভেম্বর) শারম আল শাইখে এসে পৌঁছান তথ্যমন্ত্রী। মূল সম্মেলনের পাশাপাশি ১০ ও ১১ নভেম্বর সেখানে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে যথাক্রমে খাদ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বাংলাদেশের খাদ্যব্যবস্থায় জলবায়ু সহনীয়তা’ ও ওয়াটার এইড সংস্থা আয়োজিত ‘দেশে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনের ওপর দুর্যোগজনিত ক্ষতি’ সেমিনার দুটিতে যোগ দেবেন ড. হাছান মাহমুদ।

উল্লেখ্য, মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরি ৬ নভেম্বর উদ্বোধনী সাধারণ অধিবেশনে কপ২৭-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ২১ এ ১৯৬টি পার্টি স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় করণীয়গুলো কার্যকর করাসহ বিশ্বকে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে অন্তত ১২০টি দেশের শীর্ষ নেতারা এ বছর শারম আল শাইখে মিলিত হচ্ছেন।