সেই বাছিরের জামিন চেম্বারে স্থগিত

দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

এর আগে ২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুস দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুস লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুস দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।

এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।

এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দলনেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অপরদিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার ডিআইজি মিজানকে এ মামলায়ও গ্রেফতার করা হয়।

এরপর চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘুস নেওয়ার কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর ও পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল এবং জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান খন্দকার এনামুল বাছির। এরপর গত ১৩ এপ্রিল তার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।

পরে গত ২৩ আগস্ট তার জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। তবে সে আদেশ পরদিন (২৪ আগস্ট) প্রত্যাহার করে নেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

তবে পুনরায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান বাছির। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য নথি প্রস্তুতির নির্দেশ দেন আদালত। জামিনাদেশের ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। গত ১৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. রইস উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

তবে সেই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানায় দুদক। ফলে চেম্বার জজ আদালতের আদেশে আটকে গেলো বাছিরের কারামুক্তি।

আরও পড়ুন:

ছয় মাসের জামিন পেলেন এনামুল বাছির