ভুয়া বন্ধকে ঋণ: দুদককে ৩ মাসের মধ্যে অনুসন্ধানের নির্দেশ

ঢাকার উত্তরার আজমপুর অংশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে বেসরকারি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করতে ৩ মাসের সময় বেঁধে দিলেন হাইকোর্ট। দুদককে এ নির্দেশ পালন করতে বলা হয়েছে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটি শুনানির জন্য আসবে এবং সেদিন কী কারণে ভুয়া ডকুমেন্টে ঋণ দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে জানাতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) জবাব দাখিল করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

এছাড়াও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে দুর্নীতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

আদালতে বিএফআইইউ'র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ।

এর আগে গত ২১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওবায়েদ আহমেদ বাদী হয়ে এ রিট করেন। রিট আবেদনে গত ১৬ এপ্রিল দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত “মহাসড়ক বন্ধক দেখিয়ে লুটপাট ১৫ কোটি টাকা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মো. গোলাম ফারুক নামে এক প্রতারক। ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি মোটা অঙ্কের এ ঋণ বাগিয়ে নেন। তবে সেটি ধরা পড়ার পর আবার দলিল সংশোধন করেন। এবার আগের বন্ধককৃত জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে ব্যাংকে জমা দেন। সংশোধিত দলিলের জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপনের চেষ্টা করলে ব্যাংক জানতে পারে সেটিও ভুয়া। সংশোধিত দলিলের জমির আসল মালিক জামির আলী। ২৭ শতাংশ ওই জমি দখলে নিতে একাধিকবার তার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা চলে। অবশেষে গত ১৪ এপ্রিল রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে ফারুকসহ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফিরোজ আল মামুন ওরফে ফিরোজকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। পরে ১৫ এপ্রিল দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

রিটের পর আইনজীবী জানান, মহাসড়কের জায়গা বন্ধক দিয়ে ঋণ নিয়েছেন। একটি পত্রিকায় ও একটি বেসরকারি টিভিতে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সম্প্রতি গোলাম ফারুক একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু মহাসড়কের জমি বন্ধকের ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই ওই ঘটনার তদন্ত চেয়ে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চেয়ে আবেদন করা হয়।