অপারেশনে মাইশার মৃত্যুতে ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে হাতের আঙুলের অপারেশনের সময় কুড়িগ্রামের শিশু মারুফা জাহান মাইশার (৫) মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) রূপনগর থানায় মামলাটি করেন শিশুটির বাবা মোজাফফর হোসেন।

মামলায় তিন চিকিৎসক ও হাসপাতালটির মালিক কর্তৃপক্ষকে (অজ্ঞাত) আসামি করা হয়েছে। তিন চিকিৎসক হলেন, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আহসান হাবীব, অপারেশনকারী সহকারী অধ্যাপক ডা. শরিফুল ইসলাম ও ডা. রনি। মামলার বাদী নিজেই বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রূপনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক নয়ন দাসকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

রূপনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক নয়ন দাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নেই। মঙ্গলবার আদালতে দাফন করা শিশুটির ময়নাতদন্ত করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। আদালত অনুমতি দিলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের সহায়তায় লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে। তদন্ত শেষে ঘটনার মূল কারণ জানা যাবে।

আরও পড়ুন: আঙুলের অপারেশনে শিশুর মৃত্যু, গোসলের সময় দেখা গেলো পুরো পেটে সেলাই

এই মামলার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু বলেন, পেনাল কোডের ৩০৪ ধারা অনুসারে এই মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড, সঙ্গে জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। যেহেতু হাসপাতালটি অনুমোদনহীন, এক্ষেত্রে সেখানে অপারেশনের আয়োজন করা প্রতারণার শামিল। তদন্ত কর্মকর্তা এই বিষয়টি আমলে নিতে পারেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে মাইশা নামে কুড়িগ্রামের এক শিশুর হাতের আঙুলের অপারেশন করার সময় মৃত্যু হয়। পরে সেদিনই শিশুটির লাশ নিয়ে কুড়িগ্রামে ফিরে আসেন তার বাবা-মা। দাফনের আগে গোসল করানো নারীরা দেখতে পান, মাইশার নাভির নিচে পেটজুড়ে সেলাই করা। ঘটনা প্রকাশ হলে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়।

শিশুটির পরিবারের দাবি, হাতের অপারেশনের সময় তাদের মেয়ের পেট কেন কাটা হয়েছে তা তারা জানেন না। এটিকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী।