বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমনের রহস্যজনক মৃত্যু, আদালতে বাবার মামলা

বেসরকারি সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আরিফ মাহমুদ সুমনের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তীর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

এর আগে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) হত্যার অভিযোগ এনে একই আদালতে দু’জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭ থেকে ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের বাবা আলী আকবর। দুই আসামি হলেন- মোহাম্মদ হৃদয় মিয়া (২২) ও রনি হোসেন (২৭)।আদালতে বাদীপক্ষে আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম ও মুহাম্মদ ইয়াছিন শুনানি করেন। বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান খাদেমুল ইসলাম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আরিফ মাহমুদ সুমন চলতি বছর ৯ জুন মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শয্যায় গুরুতর আহত অবস্থায় তার সন্ধান পায় পরিবারের সদস্যরা। এরপর ধানমণ্ডি পপুলার হাসপাতালে নিয়ে তার মাথায় অপারেশন করা হয়।

হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করতে যান বাদী আলী আকবর। পুলিশ মামলা না নিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সুমনের মৃত্যু হয়েছে মর্মে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করিয়ে নেয়। তবে সেই জিডির তদন্তও হয়নি। এমতাবস্থায় চলতি বছর ২৫ জুলাই ধানমণ্ডি পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমন মারা যান। মৃত্যুর পর লাশ ময়নাতদন্ত না করে বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় পুলিশ। যেখানে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও ময়নাতদন্ত করবে না মর্মে বাদীর কাছ থেকে চাপ দিয়ে লিখিত কপিতে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর পুলিশ ঘটনা তদন্তের আশ্বাস দিলেও দীর্ঘদিন তদন্ত না করায় নিহতের বাবা আদালতে এই মামলা করলেন।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, সুমনের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আসামিদের কাছ থেকে নিহত সুমনের মোবাইল ও মানিব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ বাদিকে ফেরত দেন। তবে বাদী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সুমন বেসরকারি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করে খণ্ডকালীন একটি প্রজেক্টে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করছিলেন। একই সঙ্গে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করছিলেন। তার বাবা আলী আকবর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত। সুমন পরিবারের সঙ্গে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার ঢাকা পলিটেকনিক স্টাফ কোয়ার্টারে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন।