গ্রেফতার ৩০০, আহত ৫০ পুলিশ সদস্য

বিএনপি অফিস থেকে ১৫ ককটেল, ১৬০ বস্তা চালসহ খিচুড়ি উদ্ধারের দাবি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ বলেছেন, ‘নয়া পল্টনে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের ভেতর থেকে অবিস্ফোরিত ১৫টি ককটেল, দুই লাখের বেশি টাকা, অসংখ্য পানির বোতল, ১৬০ বস্তা চাল এবং রান্না করা খিচুড়ির কয়েকটি ডেকচি উদ্ধার করা হয়।’

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।বিএনপি অফিস থেকে উদ্ধার করা জিনিসপত্র

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘অনেকে ককটেল বিস্ফোরণ করে পার্টি অফিসের ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। সেখান থেকে আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। তারা প্রাথমিকভাবে স্বীকারও করেছে।’ যদিও অভিযান চলাকালেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পুলিশ ব্যাগে করে বিস্ফোরক দ্রব্যাদি বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে নিয়ে গেছে।’

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজকে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে উসকানি দিয়ে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বিএনপির মতো একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে সবকিছু তছনছ করেছে, সমস্ত ফাইলপত্র নিয়ে গেছে। লাইট ভেঙে দিয়েছে। কম্পিউটার ভেঙেছে। মেইন সুইচ ভেঙেছে। এককথায় লুটপাট করেছে।’

ডিবির ঢাকা প্রধান হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি পার্টি অফিসের সামনে তারা রাস্তা বন্ধ করে বসে পড়বেন। পুলিশ যখন তাদের বললো—আপনাদের রাস্তা বন্ধ করাটা ঠিক হচ্ছে না তখন পুলিশের ওপর তারা চড়াও হয়। পুলিশের ওপর তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলো। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। তারা পুলিশের দিকে শত শত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘যখন দেখলাম অনেক ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দলীয় কার্যালয়ে আমরা প্রবেশ করি। সেখানে দেখলাম অবিস্ফোরিত ককটেল রয়েছে। আমরা দুই লাখের অধিক টাকা পেলাম। লাখ লাখ পানির বোতল, খিচুড়ি, ১৬০ বস্তা চাল এবং খিচুড়ি পাক করা অবস্থায় পেয়েছি।’318279870_1137842860208255_1052802880017949193_n

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘একটা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার জন্য বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দেওয়া হলো, আরও তিন দিন বাকি—কিন্তু তারা সেখানে যাবেন না। তাদের  দরকার থাকতেই পারে। তারপরও তারা আজকে ৭ তারিখ এখানে (নয়াপল্টন) রাস্তায় বসে পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালেন, পুলিশকে আহত করলেন। তার ধারাবাহিকতায় বিএনপি অফিসে ঢুকে অবিস্ফোরিত ককটেল পেলাম, যেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। আমি মনে করি, এটি তাদের একটি দুরভিসন্ধি ছিল।’

আটক ও গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আশপাশের এলাকা থেকে তিন শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছি। এরমধ্যে অনেকেই আছেন যারা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, অনেকেই আছেন মামলার আসামি। তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। যাচাই-বাছাই করবো। তাদের বিরুদ্ধে যদি সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে মামলা করা হবে।’

পুলিশ আহত হওয়ার বিষয়ে হারুন বলেন, ‘৫০ জনের অধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া অনেক পুলিশ রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে’।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম