‘বিনিময় হার কম রেখে প্রণোদনা দিয়ে লাভ নেই’

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা চাই, যে বিনিময় হার আছে, সেই হারে সঠিক পয়সাটি আমাদের শ্রমিক ভাইরা পায়। প্রধানমন্ত্রী ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছেন। বিনিময় হার কম দিয়ে যদি আমাকে প্রণোদনা দেন, তাতে কোনও লাভ নেই। তিনি বলেন, ‘আমার যেটা প্রাপ্য, সেটার বাইরে গিয়ে যেটা পাবো, সেটা হচ্ছে প্রণোদনা। কিন্তু আমার যেটা প্রাপ্য সেটাই তো পাচ্ছি না।’

রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্ধেক রেমিট্যান্স বৈধ চ্যানেলে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক আর অনানুষ্ঠানিক ডলার রেটের মধ্যে যখন পার্থক্য বাড়বে, অর্থনীতির বাস্তবতাই হচ্ছে— তখন টাকা অন্যপথে আসবে। বাংলাদেশে থেকে এদেশের খেয়ে টাকা পাঠাচ্ছে বিদেশে। শ্রমিক ভাইদের দুই টাকা বেশি না দিয়ে তারা যে দেশাত্মবোধ দেখাবে, সেটা আমরা আশা করতে পারি না।’

এসময় তিনি চার শতাংশ প্রণোদনা,  যার মধ্যে আড়াই শতাংশ নগদ এবং বাকিটা পেনশন স্কিম হিসেবে দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

অন্য চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কেন চলে যাচ্ছে, তার কারণ খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন আনিসুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা আজকে আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) কাছে যাচ্ছি, ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য। তারা নানা শর্ত দিচ্ছে, তাদের শর্ত মানতে হচ্ছে। আমরা যদি যথাযথভাবে আমাদের অভিববাসন সেক্টরকে উন্নত করতে পারি এবং আমাদের যে রেমিট্যান্স আসে, আর যেগুলো আসছে না। অন্য পথে যাচ্ছে, সেগুলো যদি আনা যায় এরকম ৫ বিলিয়ন ডলার কোনও ব্যাপার না। আমরা আমাদের প্রবাসীদের কাছ থেকেই পেতে পারি।’

আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘মালয়েশিয়া থেকে দেড় লাখের মতো কর্মীর চাহিদা পাওয়ার পরও দেশটিতে কর্মী গেছেন মাত্র ৩০ হাজার। চাহিদাপত্র পাওয়ার পরও কাঙ্ক্ষিত কর্মী না পাঠানোর পেছনে সিন্ডিকেটকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ১ হাজার ৬০০ রিক্রুটিং এজেন্সি আছে। তার মধ্যে ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনুমতি আছে। দেড় লাখের মতো লোকের চাহিদা পাওয়া গেছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কর্মী গেছে মাত্র ৩০ হাজার। এত কম লোক যাওয়ার কারণ হচ্ছে সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের কারণেই এ অবস্থা।’

সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় নতুন সরকার আসছে। সব এজেন্সির জন্য শ্রমবাজার খুলে দিতে মন্ত্রণালয়কে বলবো। এর মধ্যে তারা (মালয়েশিয়া) যাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে চাইবে, তারা করবে।’

এসময় মন্ত্রী ইমরান আহমদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন উপস্থিত ছিলেন।