পরীমণির বিরুদ্ধে মাদক মামলার কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত

চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে হওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা বাতিল সংক্রান্ত রুল ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে হাইকোর্টে নিষ্পত্তি না পর্যন্ত বিচারিক আদালতে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন পরীমণির আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ৩ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে পরীমণির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।

এর আগে, ২০২১ সালের ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে পরীমণির বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। পরে গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গত ৩১ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন পরীমণির জামিন মঞ্জুর করেন। এ মামলায় ৪ অক্টোবর পরীমণিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১০ অক্টোবর পরীমণি ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন নেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমণির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনও কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমণির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমণি এ মামলার অপর দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম দীপু ও কবির হোসেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমণি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।

পরে একই মামলায় গত ৫ জানুয়ারি পরীমণিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে আদালত পরীমণিসহ তিন জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এরপর ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলা ও একই মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে পরীমণি হাইকোর্টে আবেদন জানান।

পরে ২০২২ সালের ১ মার্চ মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলা ও অভিযোগ গঠনের আদেশের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার মামলা বাতিলের বিষয়ে রুল জারি করেন আদালত। মামলার বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। পরীমণির আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। পরে সে আদেশের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।