একটা টাকাও আমি অসৎ উপায়ে আয় করিনি: তাকসিম এ খান

ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান দাবি করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪টি বাড়ি থাকার তথ্য সঠিক নয়। আছে শুধু তার স্ত্রীর নামে একটা অ্যাপার্টমেন্ট। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমার কোনও বাড়ি নেই। সেখানে ১৪টি বাড়ির ব্যাপারে ডাহা মিথ্যা একটা প্রতিবেদন ছাপানো হলো।’

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল সোমবার (৯ জানুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। খবরটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলে আজ কয়েকটি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।

তাকসিম এ খান জানান, তার স্ত্রী-সন্তান যুক্তরাষ্ট্রে ওয়েল স্ট্যাবলিশড (ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত), তাই সেখানে একটি বাড়ি কেনায় খুব অসুবিধার কিছু নেই। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর নামেই ওই একটা বাড়ি আছে। সেটাকেও বাড়ি বলা যাবে না, এটা একটা অ্যাপার্টমেন্ট।’

এ পর্যন্ত একটা টাকাও অসৎ উপায়ে উপার্জন করেননি বলেও দাবি করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমার যা উপার্জন, তা সবার কাছে স্পষ্ট। আয়কর নথিতে আমার সব উপার্জনের তথ্য স্পষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। এর বাইরে একটা টাকাও আমি অসৎ উপায়ে আয় করিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমার যে বেতন, তা সবার কাছেই ওপেন একটা বিষয়। এখানে লুকোচুরির কিছু নেই। বেতন ছাড়া আমার আয়ের আর কোনও পথ নেই। আমি যা আয় করি, তা সৎভাবে উপার্জন করি, একটি টাকাও আমার অবৈধ নয়। এই আয় দিয়ে আমার যেভাবে চলা যায়, সেভাবেই আমি চলি। আমার স্ত্রী-সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং সেখানে ওয়েল স্ট্যাবলিশড।’

প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমি দুর্নীতি করেছি, এমন অনেক রিপোর্ট এর আগে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আমি কোনও দুর্নীতি করিনি, তাই সেসব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যে রিপোর্ট করা হলো, সেটাও ভিত্তিহীন। যুক্তরাষ্ট্রে আমার কোনও বাড়ি নেই। সেখানে ১৪টি বাড়ির ব্যাপারে ডাহা মিথ্যা একটা প্রতিবেদন ছাপানো হলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে হেয় করার জন্য মিথ্যা প্রতিবেদন করলো, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এমন নয় যে আমি এখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছি বরং আমি যুক্তরাষ্ট্র থেকেই ঢাকা ওয়াসায় চাকরি করতে এসেছি। আমি অনেক আগে থেকেই পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আমি এখানে একটা টাকাও অসৎ উপায়ে উপার্জন করিনি। ফলে টাকা সেখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) পাঠানোরও প্রশ্ন আসে না।’

ঢাকায় কোনও সম্পত্তি বা জমি-বাড়ি কেনার দরকার হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী তার বাবার বাড়ির দিক থেকে অনেক সম্পত্তি-জমি পেয়েছেন। সে কারণে আমার ঢাকায়ও কিছু কেনার দরকার হয়নি। এ ছাড়া আমার স্ত্রী-সন্তান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং সেখানে ভালো চাকরি করায় তাদের সেখানেও ভালো অবস্থান আছে। আমি যা বেতন পাই, সব মিলিয়ে আল্লাহর রহমতে আমাদের ভালোভাবে চলে যাচ্ছে। তাই দুর্নীতি ও অসৎ উপায়ে উপার্জনের দরকার হয় না আমার।’

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা দুটি অভিযোগের অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জানাতে বলেছেন আদালত।