আগারগাঁওয়ে ডিএনসিসির প্রথম ‘হলিডে মার্কেট’ চালু, পর্যায়ক্রমে সব ওয়ার্ডেই

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে প্রথমবারের মতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশের কুটিরশিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের পণ্য ও খাদ্যপণ্য নিয়ে শুরু হলো হলিডে মার্কেট। সপ্তাহের প্রতি শুক্র ও শনিবার এই মার্কেট সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় আগারগাঁওয়ে হলিডে মার্কেটের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। হলিডে মার্কেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মীর রেজাউল আলম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজাসহ স্থানীয় কাউন্সিলররা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেন, 'হলিডে মার্কেটের শুভ সূচনা করলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তাদের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি বলতে চাই, এমন সব উদ্যোগে নারী উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করুন। নারীরা যে তাদের উদ্যোগগুলো নিয়ে আরও এগিয়ে যেতে পারে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে অর্ধেক নারী, আর ভোটার হিসেবে বিবেচনা করলে কিঞ্চিৎ বেশি। তাই এই নারীদের রেখে আমরা বেশিদূর এগুতে পারবো না। তাদের সব কিছুতে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের মাধ্যমে আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারবো। এই হলিডে মার্কেট অত্যন্ত সুন্দরভাবে পরিচালিত হতে হবে, কোনোভাবেই যেন এর মিস ম্যানেজমেন্ট না হয়। আর এর পরিধি আরও বাড়িয়ে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার উদ্যোগ নিতে হবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে।’

হলি ডে মার্কেট (1)

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্যের বিক্রয় ও বিপণন এবং এসএমই খাতকে এগিয়ে নিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং ঐক্য ফাউন্ডেশন প্রথমবারের মতো এই মার্কেটের আয়োজন করেছি। আমরা পাইলট প্রকল্প হিসেবে আগারগাঁওয়ের এই রাস্তায় শুরু করেছি। সড়কটির উত্তর-দক্ষিণ দুই ধারের সুবিস্তৃত গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনে হলিডে মার্কেট বসবে। এখানে পাইলট পকল্প সফল হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডেই আমরা এমন হলিডে মার্কেট করবো। খুব শিগগিরই এটা বাস্তবায়ন করা হবে।'

মেয়র বলেন, 'বিশ্বের উন্নত দেশের অনেক শহরে দেখেছি হলিডে মার্কেট, সন্ধ্যাকালীন মার্কেট বসে। উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও হলিডে মার্কেট করার উদ্যোগ নিয়েছি। এই হলিডে মার্কেটে কম দামে ভালো পণ্য পাওয়া যাবে। এখানে মূলত এসএমই উদ্যোক্তারা দোকান নিয়েছেন। তারা নিজেদের তৈরিকৃত পণ্য এখানে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। তাদের মাঝে কোনও মধ্যস্বত্বভোগী নেই। ফলে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি হবে।'

প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা বাস্তবায়নে ডিএনসিসি কাজ শুরু করেছে উল্লেখ করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করছি। দ্রুতই অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হবে। রিকশাগুলোকে কিউআর কোডসহ ডিজিটাল নম্বর প্লেট দেওয়া হবে। দ্রুতই শুরু হবে অন স্ট্রিট স্মার্ট পার্কিং। আমার নির্বাচনের ইশতেহার অনুযায়ী ফুটপাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছি। মিরপুর ১০ নম্বরে হকারদের জন্য পাইলট প্রকল্প চলছে। সপ্তাহে পাঁচ দিন নির্দিষ্ট হকাররা বিকেল ৪টার পর থেকে ফুটপাতে বসছে। অন্য সময় ফুটপাতে কোনো হকার বসতে পারবে না। হলিডে মার্কেট শুরু হলো। ইভিনিং মার্কেটও পরিকল্পনায় আছে।'

হলি ডে মার্কেট (2)

অনুষ্ঠান শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ডিএনসিসি মেয়র বেলুন উড়িয়ে হলিডে মার্কেটের শুভ উদ্বোধন করেন। পরে ডিএনসিসি মেয়র প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে স্টলগুলো ঘুরে দেখেন।

সড়কের দুই পাশের প্রতিটি পাশে ৫০টি করে মোট ১০০টি স্টল রয়েছে। এ হলিডে মার্কেটে এসএমই উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করবেন। পণ্যের মধ্যে আছে- চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, হস্তশিল্প, ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল পণ্য, হোমডেকর পণ্য, অর্গানিক কৃষিপণ্য, পার্বত্য অঞ্চলের কৃষিপণ্য, কৃষিপণ্য, খাদ্যপণ্য ও পানীয় নিয়ে স্টল সাজিয়েছে। সেই সঙ্গে বৃক্ষপ্রেমিকদের জন্য রয়েছে নার্সারির উদ্যোক্তারা। হলিডে মার্কেটে সাংস্কৃতিক আয়োজনসহ নানান ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকবে ঢাকাবাসীর জন্য। হলিডে মার্কেটে স্টল বরাদ্দ পেতে যোগাযোগের নম্বর ০৯৬৭৮৩৬৬৬৬৬। এছাড়াও ‘Dncc-Oikko Holiday Market’ এই ফেসবুক পেজেও যোগাযোগ করে স্টল বরাদ্দ নেওয়া যাবে।