এনটিআরসিএ’র চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পেলো ইনডেক্সধারী ৬৬ শিক্ষক

দেশের বিভিন্ন জেলার ৬৬ জন ইনডেক্সধারী শিক্ষককে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) তাদের রিটের ওপর জারি করা রুলের শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ মাহমুদ বাশার।

পরে রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে অনুসরণীয় পদ্ধতি” বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের ৭ নং ক্রমিকে উল্লেখ আছে যে ‘‘কর্মরত কোনও শিক্ষক যদি অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে আবেদন করেন তবে তাকেও অপরাপর আবেদনকারীদের একইরূপ মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হবে”। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ধারা ১২ এবং বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ধারা ২৩.১ এ উল্লেখ্য আছে যে, ‘‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সমপদে বা উচ্চতর পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবে। পূর্বের প্রতিষ্ঠান হতে ছাড়পত্র ও দায়মুক্তি প্রাপ্তি সাপেক্ষে নতুন প্রতিষ্ঠানে এমপিও প্রাপ্য হবে” অর্থাৎ কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ আছে।

কিন্তু ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অপর একটি পরিপত্র জারি করে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ সালের পরিপত্রের ৭ নং ক্রমিকের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করে এবং পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর এনটিআরসিএ ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যার ১২ নং শর্তে ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বরের পরিপত্রের বিষয় উল্লেখ করে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ বাতিল করেন।

তবে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বরের পরিপত্রের উপর সংক্ষুব্ধ হয়ে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা রিট পিটিশন দয়ের করলে গত ১৬ জানুয়ারি প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। 

এনটিআরসিএ’র ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ এর শর্ত নং-১২ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১৪ নভেম্বরের পরিপত্র অনুযায়ী রিটকারীদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদনের সুযোগ বাতিল করা কেন অবৈধ হবে না এবং জনবল কাঠামো নীতিমালা অনুযায়ী রিটকারীটের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ এ আবেদন করার সুযোগ প্রদান করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যানসহ মোট চারজন বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এদিকে ৬৬ জন রিটকারী তাদের আবেদনের সুযোগ প্রদান করার জন্য নির্দেশনা চেয়ে একটি আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেন।

শুনানি নিয়ে মো. মফিজুর রহমানসহ ৬৬ জন রিটকারীকে এনটিআরসিএ-এর ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ প্রদানের নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট।