সুইডেন- ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতদের তলব ও প্রতিবাদ জানানোর দাবি সংসদে

সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন অবমাননার জন্য দেশ দুটির ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূতদের তলব করার দাবি উঠেছে সংসদে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে দেশ দুটির রাষ্ট্রদূতদের তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানোর দাবি করেছেন। এদিকে এই দুটি ইউরোপীয় দেশে কোরআন অবমাননার জন্য আগামী শুক্রবার মিটিং মিছিল করে প্রতিবাদ জানানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি।

পয়েন্ট অব অর্ডারে জাতীয় পার্টির আবু হোসেন বলেন, ‘সুইডেনে কোরআন অবমাননার পর এবার ডেনমার্কেও ঘটলো একই ঘটনা। শুক্রবার ডেনমার্কের রাজধানীর একটি মসজিদ ও তুরস্ক দূতাবাসের কাছে কোরআন পোড়ানো ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম থেকে জানা যায়— ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী রাসমুস পালুদান ও তার দলের হার্ড লাইনের অনুসারীরা এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট। শুক্রবার কোপেন হেগেনে মসজিদের সামনে যে কোরআন পোড়ানো হয়েছে, সেখানে ফেসবুক লাইভে বলা হয়েছে— যতদিন ন্যাটোতে সুইডেনকে অন্তর্ভুক্ত করা না হবে, ততদিন এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ২১ জানুয়ারি সুইডেনে তুরস্ক দুতাবাসের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তার (রাসমুস পালুদান) সংশ্লিষ্টতা আছে। তার সুইডিশ অনুসারীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’

জাতীয় পার্টির এই এমপি বলেন, ‘পৃথিবীর যেকোনও দেশেই হোক না কেন, আমাদের পবিত্র কোরআনের অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। কোরআনের অবমাননায় প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কেবল মুসলমান নয় পৃথিবীর কোনও ধর্মপ্রাণ মানুষ ধর্মের অবমাননতা মেনে নিতে পারে না। কেবল বাংলদেশ নয়, গোটা বিশ্বের মুসলমানরা  কোরআনের এই অবমাননায় ক্ষুব্ধ ‘

তিনি বলেন, ‘প্রায়ত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা ও জুমার নামাজ আদায়ের সুবিধার জন্য শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব জেলা- উপজেলায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারে মডেল মসজিদ নির্মাণ করছেন। ইতোমধ্যে ১০০টির নির্মাণ তিনি শেষ করেছেন। দেশের শতকরা ৯৩ শতাংশ মানুষ মুসলমান। বাঙালি মুসলমানরা অত্যন্ত ধর্মভীরু। পররাষ্ট্র প্রকাশ্যে আগুন দেওয়ার মতো ক্ষমার অযোগ্য ঘটনার নিন্দা জানানোর জন্য আবেদন করছি। ডেনমার্ক ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন অবমাননার জন্য ১৪৭ বিধি অনুযায়ী সাধারণ আলোচনা ও নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের জন্য নোটিশ দিয়েছেন উল্লেখ করে পয়েন্ট অব অর্ডারে সেই নোটিশ পড়ে শোনানো শুরু করেন। নোটিশের ওপরের পরিবর্তে তিনি পয়েন্ট অব অর্ডারে বলার জন্য অনুরোধ করেন।

পরে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে প্রতিবাদ করা হয়েছে। সরকারের কাজ সরকার করেছে। মুসলমান হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে। সংসদেরও দায়িত্ব আছে। কোরআনের অবমাননার জন্য বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের মুসলমানদের রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে মিটিং মিছিল শুরু হয়েছে। আগামী শুক্রবারও মিটিং মিছিল শুরু হবে। কোরআন নয় যেকোও ধর্মগ্রন্থের অবমাননায় আমরা নিন্দা জানাই। এজন্য আমার দাবি থাকবে, আমার প্রস্তাবটি ১০ মিনিটের জন্য হলেও আলোচনা করে ঘটনার নিন্দা জানানোর।’