বায়রার সভায় হট্টগোল, সাংবাদিকদের ওপর চড়াও

মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার ‘সিন্ডিকেটমুক্ত’ করতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এই সভা শুরু হয়। পুরো সভার মধ্যে সিন্ডিকেট ইস্যুতে হট্টগোল চলে। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের ওপর ব্যবসায়ীদের চড়াও হওয়ার ঘটনাও ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে দফায় দফায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভায় সিন্ডিকেট ইস্যুতে হট্টগোল চলে। বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটিতে সিন্ডিকেটের সদস্য আছে কি নেই সে প্রসঙ্গে নিয়েই হট্টগোল হয়। এক পর্যায়ে হোটেলে ক্রিকেট দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা অনুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্য জানান, আমরা এখানে দায়িত্ব পালন করছিলাম। ওনাদের হট্টগোল দেখে আমরা সেখানে যাই। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বায়রার সভায় হট্টগোল

অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে দুপুর ১টার কিছুপর আবারও হট্টগোল শুরু হয়। বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মো. ফখরুল ইসলামের সিন্ডিকেট নিয়ে বক্তব্যে আবারও উত্তেজিত হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এসময় মূল মঞ্চের সামনে জড়ো হন কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাদের ধাক্কাধাক্কিতে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বুম মাটিতে পড়ে গেলে সেখানে এগিয়ে যান সময় টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সানবীর ইসলাম রুপল। তখন তার দিকেও তেড়ে আসেন এবং আক্রমণ করার চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা। এসময় বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে অন্যান্য সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানান।

সানবীর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বায়রা একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে। সেখানে তারা নিজেরাই দফায় দফায় হট্টগোল করে। একবার ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। পুলিশ এসে একবার হস্তক্ষেপ করে এখানে। তারপরও তারা প্রোগ্রামের মাঝখানে কয়েকবার উত্তেজিত হয়েছে।

বায়রার সভায় হট্টগোল

তিনি আরও বলেন, শেষ দিকে একজনের বক্তব্যের কারণে আবার তারা জড়ো হয়ে যায়। আমি দেখছিলাম যে আমার টেলিভিশনের বুম ও অন্যান্য বুম টান দিয়ে ডায়াস থেকে ফেলে দিয়েছে। ফেলে দেওয়ার পর আমি প্রতিবাদ জানাই। তাদের নিজেদের কোন্দল নিজেরা করুক। আমার এবং আমার সহকর্মীদের বুম কেন ফেলে দেবে? তখন আমার ওপরে তেড়ে আসে। এক পর্যায়ে একজন গায়ে হাত দিয়ে ডায়াস থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বায়রার প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্যরা তখন শান্ত করার চেষ্টা করে। তারপরও তারা নানারকম হুমকি ধামকি দিতে থাকে।

বায়রার সভায় হট্টগোল

এসময় অন্যান্য সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানালে বায়রার সভাপতি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান এবং দোষীকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেবেন বলেও জানান তিনি। এসময় একজনকে চিহ্নিত করা হলে তিনি স্টেজে এসে বলেন আমি কারও গায়ে হাত তুলিনি।

বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, আমাদের মধ্যে যা দ্বিধা দ্বন্দ্ব আছে, তা আমরা নিজেরাই সমাধান করবো। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।