সারা দেশ নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকিতে: আইইডিসিআর

এ বছর এখন পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে ১০ জন আক্রান্ত হয়েছে, যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আক্রান্তদের মধ্যে সাত জনেরই মৃত্যু হয়েছে, যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের সব জেলা এখন নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘আমরা নিপাহ ভাইরাসের সার্ভিলেন্সে জোর দিয়েছি। যখন যেখানেই নতুন কেস হচ্ছে, আমরা খবরটা পাচ্ছি। ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত ১০ জন শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে ৭ জনই মারা গেছেন।’

কয়েকটি জেলায় এখন পর্যন্ত রোগী পাওয়া গেলেও সব জেলাতেই ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কেউ যদি বেঁচেও যান তার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। আমরা যদি শুধু কাঁচা খেজুরের রস খাওয়াটা বন্ধ করে দিতে পারি, তাহলেই ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারি।’

তাহমিনা শিরিন আরও বলেন, ‘সতর্কতা অবলম্বন করে রস সংগ্রহ করলেও তাতে ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ বাদুড়ের লালা এবং প্রস্রাব থেকে ভাইরাসটি রসের মধ্যে আসে।’

তিনি বলেন, ‘খেজুরের কাঁচা রস খাওয়ার পর ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ দেখা যায় সাধারণ আট থেকে নয় দিনের মধ্যে। অন্যদিকে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসলে লক্ষণ দেখা যায় ছয় থেকে ১১ দিনের মধ্যে।’

২০০১ সালে দেশে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২০২২ সাল পর্যন্ত সরকারিভাবে ৩২৫ জনের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩০ জনের। গত বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজই মারা গেছেন।

সম্প্রতি সচিবালয়ে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, চলতি মৌসুমে এই ভাইরাসে মৃত্যুর হার শতকরা ৭০ শতাংশ।

এর আগে দেশের ২৮ জেলায় নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে মোট ২০টি শয্যা প্রস্তুত করতে অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।