ঢাকায় পৃথক অভিযানে হত্যা মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ৫ 

নাটোরের বড়াইগ্রামে চাঞ্চল্যকর ‘ক্লু-লেস’ আমিনুল হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ দুই জন এবং মহাসড়কে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় আরমান বাহিনীর নেতাসহ আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। 

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল পৃথক দুইটি আলাদা অভিযানে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতাররা হলেন, আমিনুল হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো. বাদশা মিয়া উরুফে মনির ও মো. এনামুল হোসেন (২২) এবং আরমান বাহিনীর নেতা মো. আরমান হোসেন (২২), শাহ জামাল (২৭) এবং মো. মাসুম (২১)।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অপরাধে সম্পৃক্ততার কথা র‍্যাবের কাছে স্বীকার করেছে।

র‌্যাব- ৪ এর অধিনায়ক জানান, গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম  মাঝগাঁও গ্রামের কাছে একটি বিলের পাশে গমক্ষেতে স্থানীয় জনগণ একটি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মৃতদেহ দেখতে পায়। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করলে স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে।

স্থানীয় থানা পুলিশ মৃতদেহটি শনাক্ত করলে বড়াইগ্রাম থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। পরবর্তী সময়ে র‍্যাব এ মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে আসামিদের গ্রেফতার করে। 

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার বাদশা মিয়া উরুফে মনির পেশায় মাছ ব্যবসায়ী এবং এনামুল হোসেন আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। তবে এই পরিচয়ের আড়ালে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির মতো ঘটনা লিপ্ত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই এর মামলা রয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, তারা সিরাজগঞ্জ এলাকা থেকে নিহত আমিনুলকে অপহরণ করে  মুক্তিপণ দাবি করে। তবে তিনি মুক্তিপণ দিতে অপারগতা জানালে আসামিরা উপর্যুপরি আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে লাশ নাটোরের বড়াইগ্রাম এলাকায় নিয়ে বিলে নিয়ে ফেলে আসে।

এছাড়াও র‍্যাব-৪ এর অপর একটি অভিযানে মহাসড়কে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় আরমান বাহিনীর নেতাসহ আরও তিন জনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র‍্যাবকে জানায়, আরমানের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পথযাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি ও ছিনতাই মতো ঘটনা ঘটিয়ে আসছিল। 

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় মহাসড়কে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় অভিযান পরিচালনা করে আরমান বাহিনীর নেতা আরমানসহ তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় র‍্যাব।