পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েই হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা

বরিশালের কাজীরহাট থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকায় এসে ওষুধ ও ভোগ্যপণ্য কোম্পানির বিপণনকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। মার্কেটিংয়ের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে শুরু করেন প্রতারণা। বিভিন্ন কোম্পানির ভোগ্যপণ্য নিজেদের বলে ব্যবসায়ীদের ডিলারশিপ দিতেন এবং হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। এমন প্রতারণার দায়ে কবির হোসেন ওরফে আশরাফুল ওরফে রাসেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ বিভাগ) উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ১৮ মার্চ একজন ভুক্তভোগী প্রতারণার শিকার হয়ে ডিএমপির পল্লবী থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। পরে গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন চক্রের মূলহোতা কবির হোসেন ওরফে আশরাফুল ওরফে রাসেল (৪০), মামুন হোসেন ওরফে বেলাল ওরফে কামরুল (৪০), আবু হাসান ওরফে জামিল হোসেন (২৫) ও আব্দুল্লাহ আল রাব্বী ওরফে রেদওয়ান (২৪)। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানের নাম, ছবি সংবলিত আবেদনপত্র, কর্মী নিয়োগের ছবিসহ জীবনবৃত্তান্ত, সিল, প্যাড, বিজ্ঞাপন কপিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

ডিসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন জানান, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আভিজাত্য অফিসের ঠিকানা দিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ডিলার ও এরিয়া ম্যানেজার নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদ পাতেন। বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করা আগ্রহী ব্যক্তিরাই তাদের প্রধান টার্গেট। প্রথমে অফিসে ডেকে এনে বিশ্বাস অর্জনের জন্য অফিসে থরে থরে সাজিয়ে রাখা নানা ধরনের ভোগ্যপণ্য দেখানো হতো। আর এসব পণ্যের জেলা উপজেলার পরিবেশক ও এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে আসছিল চক্রটি।

ডিসি জানান, এভাবে টাকা হাতিয়ে অফিস গুটিয়ে গা-ঢাকা দিত চক্রটি। কয়েক দিন পর আবারও ঠিকানা বদলে ভিন্ন নামে বিজ্ঞাপন দিত তারা। প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী এমন বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করে বুঝতে পারে একই চক্র ভিন্ন নামে প্রতারণা শুরু করছে। পরে তিনি পল্লবী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। তার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে বিশ্বাস না করার পরামর্শ দিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, কোনও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার আগে তাদের সম্পর্কে খোজখবর নিতে হবে। ডিলার কিংবা চাকরি নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেন না করার অনুরোধ করেন তিনি।