শ্রদ্ধা জানাতে বাবা-মায়ের হাত ধরে এলো শিশুরাও

রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে বাবার সঙ্গে ফুল হাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছে তাজওয়ার (৫)। গায়ে সাদা-কালো পাঞ্জাবি। উদ্দেশ্য ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। তাজওয়ারের মতো অসংখ্য শিশু বাবা, মা, শিক্ষকদের সঙ্গে এসেছে শহীদ মিনারে।

নগরীর ব্যস্ত জীবনে অভিভাবকরাও আজ সুযোগ পয়েছেন সন্তানদের নিয়ে বের হওয়ার। শহীদ মিনারে এসে শিশুদের জানানোর চেষ্টা করছেন দেশের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, উপলব্ধি করাতে চাচ্ছেন মাতৃভাষার গুরুত্ব। ভোর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড়। শহীদ মিনার এলাকায় শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সাদা-কালো, সবুজ-লাল পাঞ্জাবি বা শাড়ি পড়ে এসেছে অনেক শিশু। মাথায় ‘অমর একুশে’ লেখা ব্যান্ড। রঙ তুলিতে রাঙিয়েছে নিজেদের। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে শিশুদের নিয়ে মেলায় যাবেন বলেও জানান অভিভাবকরা।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম

চার বছর বয়সী সন্তান আয়াতকে নিয়ে রাজধানীর মিরপুর থেকে এসেছেন রিয়াজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ছেলে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন হোক এমনটাই চাই। তাই শহীদ মিনারে নিয়ে এসেছি। যেন এখন থেকেই সে বিষয়গুলো বুঝতে পারে।’

বিসিএসআইইআর স্কুলে কেজিতে পড়ছে আযান। ফুল দিয়ে ফেরার পথে কথা হলো তার সঙ্গে। কেমন লাগছে জানতে চাইলে সে বলে, ‘ভালো লাগছে। ফুল দিয়েছি শহীদ মিনারে। মুখে আলপনা এঁকেছি। এখন বই কিনতে যাবো।’

ছবি: নাসিরুল ইসলাম

আযানের বাবা-মা শরীফুল ইসলাম ও তানিয়া পারভীন জানান, তারা একুশের চেতনায় বিশ্বাস করেন। সন্তানকে ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ সম্পর্কে উপলব্ধি করাতে শহীদ মিনারে এসেছেন।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে শহীদ মিনারে দুই শিশু সন্তান সৌমিক (৭) ও সৌভিককে (৪) নিয়ে এসেছেন তাপস-রিয়া দম্পতি। সবার পড়নেই কালো পোশাক। রিয়া দেবনাথ বলেন, ‘সবসময়ই চাই আমার সন্তানরা ভালো মানুষ হবে। সে জন্য দেশপ্রেমিক হওয়া জরুরি। তাই ওদের শহীদ মিনারে নিয়ে এসেছি, যাতে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। এরপর ওদের বইমেলায় নিয়ে যাবো।’