ভরা মৌসুমেও ফল বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। ফলের মৌসুমই বলা হয় এই ঋতুকে। আম, কাঁঠাল, লিচু, জামসহ সয়লাব থাকে বাজার। এ ছাড়া এ সময় পাওয়া যায় জামরুল, তালশাঁস, ডেউয়া, ছবেদা, করমচা, অড়বরইয়ের মতো দেশি ফল। রয়েছে বিভিন্ন রকমের বারোমাসি ফলও। কিন্তু মৌসুম হওয়ার পরও বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব ফল। একদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ফলের দাম আস্তে আস্তে কমে যাবে। আর ক্রেতারা বলছেন, এই সময় ফলের দাম আরও কম হওয়া উচিত।

মিরপুর ১ নম্বরের ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায় মৌসুমি ফলের দামদর। টসটসে ফলে চারপাশ থরে থরে সাজানো থাকলেও দাম উচ্চ হওয়ায় তা এখন ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।

বাজারে এই মুহূর্তে হিমসাগর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গোবিন্দভোগ ৬০ থেকে ৮০, গুটি আম ৬০ থেকে ৮০, ল্যাংড়া ৮০ থেকে ১০০ কেজি। তরমুজ ১৪০, ডেউয়া ২০০, জামরুল ১৪০, ছবেদা ২০০, জাম ২৬০, করমচা ৫০০, অরবড়ই ৬০০ টাকা কেজি।

মৌসুমী ফল (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

কাঁঠাল সাইজ ভেদে ২০০ টাকা পিস থেকে শুরু। তালশাঁস ও গাব পিস পাওয়া যাচ্ছে ৩০ ও ২০ টাকা দরে। এ ছাড়া জাত ও সাইজ ভেদে বিভিন্ন রকমের ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সোহাগ বকস। ফল কিনতে এসে এর দাম নিয়ে তিনি বলেন, সিজন অনুযায়ী ফলের দাম অনেক বেশি। আমি হিমসাগর আম কিনেছি ৮০ টাকা কেজিতে আর প্রতি শ লিচু কিনেছি ৪৩০ টাকা দরে। অথচ এখন যেই মৌসুম চলছে, সেই হিসাবে আমের দাম হওয়া উচিত ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা আর লিচু হওয়া উচিত ছিল প্রায় ২৫০ টাকা।

মৌসুমী ফল (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

ইট-বালুর কন্ট্রাক্টরের কাজ করেন মো. রাসেল। তিনি বলেন, বাচ্চার জন্য ১০০ লিচু কিনেছি। দাম রেখেছে ৪০০ টাকা। এটা অনেক বেশি। ৩০০ টাকা হলেও চলতো। এত দামে অনেক মানুষেরই কেনার সাধ্য নেই।

তবে ফল বিক্রেতা আব্দুল আহাদ বলছেন, ফলের দাম আরও বেশি ছিল। এখন তো কিছুটা কমেছে। কিছুদিন পর আরও কমে যাবে।

গ্রীষ্মকালীন ফল ছাড়াও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য ফলও। খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায় এখানেও দাম চড়া। ফলে ক্রেতারা দাম জিজ্ঞেস করে চলে যান।

এসব ফলের মধ্যে মাল্টা ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, আনার ৩৮০ থেকে ৪৫০, নাশপতি ৩০০, ড্রাগন ফল ৩৫০, সবুজ আপেল ২৫০ থেকে ২৮০, লাল আপেল ২৫০, সবুজ আঙুর ৩৮০, লাল আঙুর ৫৫০, কমলা ৪০০, পাকা পেঁপে ১৬০, পেয়ারা ৬০ থেকে ৮০, রক মেলন (সাম্মাম) ২০০ টাকা কেজি। এ ছাড়া বিভিন্ন রকমের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬০০ টাকা কেজি দরে। আর প্রতি পিস আনারস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে।

মৌসুমী ফল (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

রমজান মাস পার হলেও খেজুরের এত দাম কেন, জানতে চাইলে বিক্রেতা মো. আল আমিন বলেন, আগে মানুষ শুধু রোজার সময় খেজুর খেতো। এখন মানুষ এর উপকারিতা জানতে পেরেছে। তাই এখন সারা বছরই খেজুর খায়। দামও বাড়তি থাকে। তবে রোজার মাসে অবশ্যই অন্যান্য সময়ের থেকে বেশি বিক্রি হয়।